ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

৪ ঘন্টায় সনদপত্রে নাম ও জন্মতারিখ পাল্টেছিলেন সাঈদী

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৩ মে ২০২০  

দেলোয়ার হোসেন সাঈদী বলে আজকে আমরা যাকে চিনি সেই সাঈদী দাখিল এবং আলিম পরীক্ষার সার্টিফিকেটে নামদেয় আবু নাঈম মোঃ দেলোয়ার হোসাইন। উল্লেখ্য যে সাঈদী দাখিল পাশ করে ১৯৫৭ সালে দারুস সুন্নাত শর্শীনা মাদ্রাসাথেকে এবং আলীম পাশ করে ১৯৬০ সালে বরই পাড়া মাদ্রাসা থেকে।

এসময় সাঈদী তার জন্মতারিখ উল্লেখ করে ০১–০১–১৯৪৫। অর্থ্যাৎ সাঈদী জন্মের ১২ বছর বয়সেই দাখিল পাশ করে যাএক কথায় অবিশ্বাস্য ছিল। প্রাপ্ত তথ্য থেকেই জানা যায় যে সাঈদী তার আলিম ও দাখিল পরীক্ষার উল্লেখিত ওই নামটিপরিবর্তন করতে উদ্যোগী হয় ২০০৮ সালের ৫ ই নভেম্বর। দাখিল পাশ করার প্রায় ৫১ বছর পর এবং আলিম পাশ করবার৪৮ বছর পর সাঈদী তার নাম পরিবর্তন করে রাখে দেলোয়ার হোসেইন সাঈদী।

২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময় মনোনয়নপত্রে অসঙ্গতি ধরা পড়তে পারে বুঝতে পেরে ওই বছরের ১০ নভেম্বরমাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে 

দুর্নীতির মাধ্যমে নাম ও বয়স পরিবর্তন করে সংশোধিত সনদপত্র বের করে আনা হয়। এদুর্নীতি ও সনদ জালিয়াতির সঙ্গে মাদ্রাসা বোর্ডের কর্মকর্তারাও জড়িত বলে অভিযোগ ছিল। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেরমন্তব্য ছিল, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি জামায়াতের পরাজয় আঁচ করতে পেরে দীর্ঘ ৫১ বছর পরনাম, বয়স সংশোধন করেন দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী।

অথচ নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত আইনে আছে যে সার্টিফিকেটে নামে ভুল থাকলে এই ভুল সংশোধন করতে হবে পাশ করবার ২বছরের মাথায়। কিন্তু ৫১ বছর পর সাঈদী কিভাবে তার নাম পরিবর্তন করলো এটার উত্তর কোনোভাবেই দিতে পারেনি নাম ওবয়স সংশোধন সংক্রান্ত তৎকালীন কমিটির সদস্য সাবেক মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান 

অধ্যাপক মোঃ ইউসুফ (বর্তমানেঅবসরপ্রাপ্ত), মাদ্রাসা বোর্ডের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক হাফিজুর রহমান (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত), সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বর্তমানচেয়ারম্যান মোঃ আবদুর নূর, এবং মাদ্রাসা বোর্ডের উপ–পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবু ছালেহ আহমেদ। এই মোহাম্মদ আব্দুর নূর ২০০৩সালে সাঈদীর সুপারিশেই তৎকালীন সময়ে পদোন্নতি পেয়েছিলেন।

সাঈদী নাম পরিবর্তন করে দৈনিক সংগ্রামে পত্রিকায় একটি এফিডিভেটের বিজ্ঞাপন দেয়। যেখানে সাঈদীর বয়স উল্লেখ করাহয় ০১–০১–১৯৪৫।

“আমি দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী জন্ম তাং ০১–০১–১৯৪৫ ইং পিতা মাওলানা ইউসুফ সাঈদী বাড়ি নং ৯১৪ শহীদবাগ ঢাকা।আমি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দা। আমি পূর্ব পাকিস্তান মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বর্তমানে বাংলাদেশ মাদ্রাসাশিক্ষাবোর্ডর অধীনে আলিম ও দাখিল পাস করি, দাখিল পাসের সন ১৯৫৭ ১ম বিভাগ রোল নং ৩৯২০ কেন্দ্র সারসিন ।দাখিল পরীক্ষায় ভুলবশত: আমার নাম দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদীর পরিবর্তে আবু নাঈম মোহাম্মদ দেলাওয়ার হুসাইন লিপিবদ্ধহয়েছে। 

আলিম পাসের সন ১৯৬০ সাল রোল নং ১৭৬০ কেন্দ্র খুলনা বিভাগ ৩য়। আলিম পরীক্ষায় ভুলবশত: আমার নামদেলাওয়ার হুসাইন সাঈদীর পরিবর্তে আবু নাঈম মোহাম্মদ দেলাওয়ার হুসাইন লিপিবদ্ধ হয়েছে।প্রকৃতপক্ষে আমার শুদ্ধ ও সঠিকনাম হবে দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী । এ ব্যাপারে আমি অদ্য ৫/১১/২০০৮ ইং নোটারী পাবলিক ঢাকা এর সম্মুখে উপস্থিত হয়েআমার নাম সংশোধনের বিষয়ে হলফ করলাম। দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী, পিতা মাওলানা ইউসুফ সাঈদী, বাড়ি নং ৯১৪শহীদবাগ, ঢাকা। সংগ্রাম পি–৭২১২/০৮’”


এফিডেভিটের মাধ্যমে সাঈদী ২০০৮ এর নভেম্বর ৫, তারিখে কেবলমাত্র তার নাম পরিবর্তন করে।

সাঈদী নভেম্বর ৮, ২০০৮ সালে তার বয়স পরিবর্তন করার জন্য এফিডেভিট জমা দিচ্ছে। সাঈদী তার সার্টিফিকেটে লেখাজন্মসাল ১৯৪৫ অনুযায়ী সাঈদীর ১২ বছর বয়সে দাখিল পাশ করার কথা উল্লেখ আছে এত কম বয়সে দাখিল পাশ করা নিয়েসন্দেহ হবে শংকায় আবার তার বয়স পরিবর্তন করেন।

কিন্তু এইখানেও সাঈদী আইন ভঙ্গ করেছিলেন। কেননা বয়স সংক্রান্তএফিডেভিটের ক্ষেত্রে এফিডেভিট করতে হয় ব্যাক্তির মাকে কিংবা বাবাকে যদি জীবিত থাকে। কিন্তু ২০০৮ সালে সাঈদীর মাজীবিত থাকতেও সাঈদী নিজে নিজে সাক্ষর করে এফিডিভেট করছে যেটি সম্পূর্ণ রূপে অবৈধ।

সাঈদী ২০০৮ সালের নভেম্বরের ৮ তারিখে সাক্ষরের স্থানে লিখেছে “দেলোয়ার হোসেন সাঈদী” সেখানে মাত্র ২২ দিনের মাথায়নির্বাচনী প্রত্যয়ন পত্রে সাঈদী তার সাক্ষর পরিবর্তন করে 

লিখেছে “আল্লামা দেলোয়ারহোসেন সাঈদী“,এখানে সাঈদীরসাক্ষর দুই যায়গায় দুই রকম মাত্র ২২ দিনের ব্যাবধানে।

 

২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রত্যয়ন পত্রে সাঈদী লিখেছে যে তার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা হচ্ছে আলীম পাশ। মানেইন্টারমিডিয়েট সমতূল্য। সুতরাং আলীম পাশ যেখানে সাঈদীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা সেখানে নামের আগে সাঈদী কোনহিসেবে আল্লামা লিখে? 

এই কথাটি সাঈদীর বিরুদ্ধে আসা রায়ের ৮ নাম্বার পাতায় লেখা রয়েছে। সাঈদীর ২০০৮ সালেরপ্রত্যয়নপত্রে উল্লেখিত সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং রায়ে উল্লেখ করা সেই অংশটি নীচে দেয়া হোলোঃ