ব্রেকিং:
কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা জিয়াউর রহমান যেভাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে চেয়েছি চলতি হজ মৌসুমে প্রথম বাংলাদেশী হজযাত্রীর মৃত্যু শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ধর্ম অবমাননা কুবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ ‘পিডাইয়া লম্বা করে দেওয়ার নির্দেশ’ ফুলবাড়িতে সীমান্তে ঢুকে বিএসএফের গুলিবর্ষণ অভিযানে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ধরে, ‘শিশুকে আঘাত’ করে পুলিশ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান রাতেই কুতুবদিয়ায় নোঙর করবে এমভি আব্দুল্লাহ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সিন্ডিকেটের থাবা প্রাণিখাদ্যের বাজারেও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল, সম্পাদক মুন নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ আজ বিশ্ব মা দিবস চাঁদপুরে মন্ত্রী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে আলোচনায় নাজিম কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
  • রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

কাজে আসছে না কৃষি আবহাওয়ার তথ্য বোর্ড

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৬ মে ২০২৪  

কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার পাঁচটি ইউনিয়নে একটি করে তথ্য বোর্ড দেওয়া হয়। এ বোর্ডে বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, বাতাসের আর্দ্রতা ও গতিবেগ পরিমাপ করার নানা ছক রয়েছে। অথচ কোনো তথ্যই হালনাগাদ করা হয়নি। ব্যবহার না থাকায় অকেজো হয়ে পড়েছে তথ্য বোর্ডের যন্ত্রপাতিগুলো।

জানা গেছে, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, রোদের প্রখরতা কিংবা ঘন কুয়াশাসহ জলবায়ু পরিবর্তন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে কৃষক ও কৃষি ফসল রক্ষায় সরকার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরপর বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর দেশজুড়ে ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্যপদ্ধতি উন্নীতকরণ’ প্রকল্প হাতে নেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় সারাদেশের ন্যায় আখাউড়া উপজেলার পাঁচটি  ইউনিয়ন পরিষদে সাঁটানো হয় কৃষি আবাহাওয়া পূর্বাবাস তথ্যবোর্ড। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাপমাত্রা, বাতাসের আদ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, আলোক ঘণ্টা, বৃষ্টির পরিমাণ ও ঝড়ের পূর্বাভাস তিনদিন আগের ও তিনদিন পরের তথ্য পাওয়ার কথা কৃষকদের। কিন্তু এসব বোর্ডের কী কার্যক্রম তা জানেন না স্থানীয় বেশির ভাগ কৃষক। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল রক্ষা করা করতে না পারায় তাদের ক্ষতি হচ্ছে।  

এদিকে কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য পাঠানোর জন্য ইন্টারনেট কানেক্টিভিটিসহ উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য ট্যাব সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ট্যাবগুলো বিকল হয়ে পড়ে আছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নীতকরণ ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের কৃষি আবহাওয়া পরামর্শ সেবা সহজলভ্য করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। ইউনিয়নে ইউনিয়নে নামমাত্র একটি বোর্ড লাগিয়ে শেষ হয়েছে এ প্রকল্প। কোথাও কোথাও বোর্ডগুলোতে ধুলা পড়ে আছে। স্বয়ংক্রিয় রেইন গজ মিটারসহ অন্যান্য উপকরণ অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। বোর্ডগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকায় কৃষকদের কোনো কাজে আসছে না। ফলে আবহাওয়ার আগাম তথ্য না পেয়ে একদিকে যেমন ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন কৃষক, তেমনি গচ্ছা যাচ্ছে প্রকল্পের টাকাও।

উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের কৃষক বকুল মিয়া বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে একটি আবহাওয়া পূর্বাভাস বোর্ড সাঁটানো দেখেছি। এটি মূলত কী কাজ করে কৃষকরা তা জানতে পারছে না। আবহাওয়ার তথ্য না জানার কারণে অনেক সময় আমাদের ফসলের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের লিচু চাষি রবিন মিয়া বলেন, আমার ছোট বড় মিলে ২০টি লিচু গাছ আছে। প্রতিটি গাছে শুরু থেকে ভালো মুকুল আসে। তীব্র দাবদাহের কারণে গুটি ঝরে পড়ছে। 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আবহাওয়ার সঠিক তাপমাত্রা জানতে পারলে লিচু নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যেতো।

কৃষক সিরাজ মিয়া বলেন, আমরা বছরের বেশির ভাগ সময় নানা প্রকারের সবজি আবাদ করি। তবে গত কয়েকদিনের তীব্র তাপমাত্রার কারণে বেশির ভাগ সবজি নষ্ট হতে চলেছে। আমাদের ইউনিয়নে আবহাওয়ার সঠিক তাপমাত্রা জানার কোনো মাধ্যম না থাকায় জমির সবজি নষ্ট হচ্ছে।

আরেক কৃষক শামসুল আলম বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের আবহাওয়ার কথা তিনদিন আগে জানার কথা থাকলেও আমরা তা জানতে পারছি না। কারণ হলো নিজ এলাকায় ইউনিয়ন অফিস নেই। অফিস হলো পৌর শহরে। যা গ্রাম থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে যে তথ্যবোর্ডগুলো লাগানো হয়েছে অচল হয়ে পড়ে থাকায় কৃষকদের কোনো কাজে আসছে না।

মোগড়া এলাকার কৃষক মো. ফরিদ মিয়া বলেন, আসলে আমাদের এখানে কোনো সময় আবহাওয়ার তথ্য পাই না। আগাম আবহাওয়ার পূর্বাভাস না পাওয়ার কারণে আমাদের সবজিসহ ফসলের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

আখাউড়া উত্তর ইউপির সচিব আকবর খান বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে একটি তথ্য বোর্ড লাগানো  রয়েছে। এটি অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় কৃষকের কাজে আসছে না কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রকল্প। এটি সচল রাখতে তিনি সংশ্লিষ্ট লোকদের দাবি জানায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের বিভিন্ন ফসল রক্ষায় আগাম তথ্য দিতে সরকার নানামুখী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে এ উপজেলায় প্রত্যেকটি ইউপি কার্যালয়ে আবহাওয়ার তথ্য বোর্ড লাগানো হয়েছে। কিছু ট্যাব নষ্ট হয়ে গেছে বলে জেনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।

উপজেলার ধরখার ইউপি চেয়ারম্যান সাফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছর আগে এই পরিষদে একটি তথ্য বোর্ড লাগানো হয়েছে। তখন আমি পরিষদে ছিলাম না। এখন এই পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছি। কিন্তু এখন পযর্ন্ত এখানে কেউ আবহাওয়ার তথ্যগুলো আপডেট করতে দেখেনি। এমনকি আমাদেরও তথ্য আপডেট করতে কেউ বলেনি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।