কুমিল্লার ৮০৯ পূজা মণ্ডপে হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব

কাশবনে পেখম মেলেছে সাদা সাদা ফুল। প্রকৃতির স্নিগ্ধ সমীরণ বলে দিচ্ছে-এ যে শিউলি ফোটা শরতের দিন। প্রকৃতির ফোটানো নিপুণ সুন্দর এমন আবহে আজ ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হচ্ছে পাঁচদিন ব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। মহাষষ্ঠী মানে সপরিবারে উমার পিতৃগৃহে আগমনের দিন।

আজ বৃহস্পতিবার শারদীয় দুর্গাদেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠী বিহীত পূজা সন্ধায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও আগামীকাল মহা সপ্তামী তিথিতে প্রতিটি পূজা মন্ডপে উৎসবের আমেজ দেখা দিবে।

বুধবার সন্ধ্যায় সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা মহানগরীসহ জেলার ৮০৯ টি পূজা মন্ডপে দুর্গা দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমে দণিায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা পূজা করা হয়। ম-পে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় এই বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এজন্যই হিন্দুমতে অকাল বোধনও বলা হয়।

এদিকে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে এবার প্রতিটি পূজা মন্ডপে দর্শণার্থীদের সমাগম হৃাস পাবে। রাত ১০টার মধ্যে প্রতিটি পূজা মন্ডপের প্রধান ফটক বন্ধসহ সন্ধ্যা আরতি সীমিত করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি। যে কারণে এবার সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লার প্রতিটি পূজা মন্ডপেও আধুনিক সাউন্ডসিষ্টেমে গাণ-বাজনায় নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান জানান- এবারের পূজা মন্ডপগুলোতে পূজার মূল কার্যাদি যথাযথ ভাবে পালনের করে বাকি সব আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে প্রতিটি পূজা মন্ডপ আমাদের নজরদারীতে থাকবে।

এবার কুমিল্লা মহানগরী সহ ১৭টি উপজেলায় ৮০৯টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এর মধ্যে মহানগরীতে পূজা মন্ডপ ৭৯টি। জেলার মুরাদনগর উপজেলা ১৩৬টি, দেবিদ্বার উপজেলায় ৭৮টি, বরুড়া উপজেলায় ৮২টি, চান্দিনা উপজেলায় ৬৯টি, দাউদকান্দি উপজেলায় ৪৬টি, হোমনা উপজেলায় ৪৩টি, বুড়িচং উপজেলায় ৩৯টি, লাকসাম উপজেলায় ৩৪টি, সদর দক্ষিণ উপজেলায় ৩১টি, আদর্শ সদর উপজেলায় ২২টি, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২১টি, মনোহরগঞ্জে ১৩, লালমাই উপজেলায় ১৫টি, তিতাস উপজেলায় ১৪টি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১২টি, নাঙ্গলকোট উপজেলায় ৯টি এবং মেঘনা উপজেলায় ৫টি পূজা মন্ডপ।