কুমিল্লায় ১৭ হাজার ইয়াবাসহ চিকিৎসক গ্রেফতার

রাজধানীতে ইয়াবা পাচারকালে ১৭ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়েছেন মো. রেজাউল হক (৪৫) নামে এক চিকিৎসক। 

বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা ডিবি পুলিশের একটি টিম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জেলার দাউদকান্দি টোল প্লাজায় একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশী চালিয়ে ইয়াবাসহ ওই চিকিৎসক ও গাড়ি চালক ধলু ফরাজীকে আটক করে। 

এসব ইয়াবা চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীতে নেয়া হচ্ছিল। তিনি রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। 

ডা. রেজাউল কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের স্কুল শিক্ষক মো. সামছুল হকের ছেলে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলাম। 

তিনি জানান, একটি প্রাইভেটকারযোগে চট্টগ্রামের লোহাগড়া এলাকা থেকে ঢাকায় ইয়াবা পাচার হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ডিবির একটি টিম ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি টোল প্লাজায় অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে প্রাইভেটকারটি সেখানে পৌঁছলে তাকে আটক করা হয়। পরে ডাক্তার রেজাউলের গাড়ি তল্লাশী করে ১৭ হাজার ইয়াবাসহ তাকে এবং তার গাড়ি চালক ধলু মিয়া ফরাজী (৩৬) আটক করা হয়। 

চালক ধলু মিয়া শরীয়তপুর জেলার ঘোষাইহাট উপজেলার বড়কাছনা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। 

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার অ্যাডিশনাল এসপি আবদুল্লাহ আল মামুন, মো: সাখাওয়াত হোসেন, আজিম উল আহসান, তানভীর সালেহীন ইমন, নাজমুল হাসান রাফি, ডিআইও-১ মো. মাঈনুদ্দিন ও ডিবির ওসি আনোয়ারুল আজিম এবং অভিযানে অংশ নেয়া জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মোহা. ইকতিয়ার উদ্দিন, এসআই পরিমল চন্দ্র দাস ও এসআই নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতার ওই চিকিৎসক সাংবাদিকদের জানান, তিনি কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকার শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরে তিনি উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকরি নেন। 

তিনি আরো জানান, ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে যাওয়ার পেছনে অনেক ইতিহাস রয়েছে। আগের ঘটনায় তাকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়। তবে এবারের ইয়াবা চালানটি তিনি রাগের বসে ঢাকায় নিতে চেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে এফসিপিএস ৩য় পার্টে অধ্যয়ন করছেন। তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার উত্তরা এলাকায় বসবাস করছেন বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন। 

জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মোহা. ইকতিয়ার উদ্দিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যে তিনি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে নিজেই, কখনো লোক পাঠিয়ে এসব ইয়াবা ঢাকায় নিয়ে একাধিক সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করতো। গাড়িতে ডাক্তারের স্টিকার থাকতো বলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ এড়িয়ে তিনি খুব সহজেই মাদক নির্ধারিত স্থানে আনা নেয়ার কাজ করতে পারতো। এর আগেও তিনি পুলিশের হাতে মাদক নিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। 

ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় মাদক মামলা রয়েছে। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় রাতে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। উদ্ধার করা ইয়াবার দাম ৫১ লাখ টাকা। এ ঘটনার সূত্র ধরে ওই চিকিৎসকের মাদক-কেনা বেচার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সহযোগীদের বিষয়েও তদন্ত করে গ্রেফতার করা হবে।