ব্রেকিং:
কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা জিয়াউর রহমান যেভাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে চেয়েছি চলতি হজ মৌসুমে প্রথম বাংলাদেশী হজযাত্রীর মৃত্যু শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ধর্ম অবমাননা কুবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ ‘পিডাইয়া লম্বা করে দেওয়ার নির্দেশ’ ফুলবাড়িতে সীমান্তে ঢুকে বিএসএফের গুলিবর্ষণ অভিযানে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ধরে, ‘শিশুকে আঘাত’ করে পুলিশ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান রাতেই কুতুবদিয়ায় নোঙর করবে এমভি আব্দুল্লাহ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সিন্ডিকেটের থাবা প্রাণিখাদ্যের বাজারেও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল, সম্পাদক মুন নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ আজ বিশ্ব মা দিবস চাঁদপুরে মন্ত্রী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে আলোচনায় নাজিম কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
  • রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

খোলাবাজারে পেট্রোল-অকটেন, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

রাস্তার পাশে সারি সারি সাজানো কোমল পানীয় বোতলের বাহারি রং দেখলে মনে হবে সরকারি অনুমোদন নিয়েই পরিকল্পিত ব্যবসায় ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। আসলে কল্পনার কিছুই সত্যি নয়। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণভাবে এভাবেই খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে অকটেন ও পেট্রোল। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় পথচারীরা। 

একই সঙ্গে নিরাপত্তাহীনতায় সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ, আর ঝুঁকিতে থাকছে খোদ স্থানীয় প্রশাসন। কারণ খোলা বাজারে অনুমোদনহীন দোকান থেকে পেট্রোল কিনে সরকারের অপশক্তিরা কিংবা দুর্বৃত্তরা ঘটাতে পারে যে কোনো অঘটন। এছাড়া অবৈধভাবে জ্বালানি তেল বিক্রি করায় কোটি টাকার রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত সরকার। তবে এখন তৎপর প্রশাসন। অসাধুদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা।

লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, মুদি দোকান হতে শুরু করে চায়ের দোকান, বিকাশ রিচার্জ লোডের দোকান, প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকান, টিনের দোকান, স্যানিটারি দোকানসহ যে কোন দোকানের সামনে রাস্তার পাশে অকটেন পেট্রোল সারিবদ্ধভাবে রেখে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এসব দোকানের কোনটিরও পেট্রোল বিক্রি করার মতো অনুমোদনপত্র নেই। জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস এবং বিস্ফোরক অধিদফতরসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে পেট্রোল, অকটেন।

 

 

কোনো রকম নিয়ম না মেনে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আবার কেউ অনুমোদন ও অগ্নিনির্বাপক ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়াই এ জ্বালানি ও পেট্রোল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব দোকানে নেই আগুন নির্বাপক যন্ত্র। দুর্ঘটনা ঘটলে তার প্রতিকারও জানা নেই এসব ব্যবসায়ীদের। জনবহুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবেই এসব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। 

বিশেষ করে রামগঞ্জ, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে বোতলে ভরে বিক্রি হচ্ছে তরল দাহ্য পদার্থ পেট্রোল।  সবকটি সড়কের পাশে শতাধিক স্থানে রয়েছে এসব দোকান। কাপড়, চা, মুদি, রড, সিমেন্টের দোকানেও বিক্রি হচ্ছে এসব পেট্রোল। বিপজ্জনক ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এসব প্রতিষ্ঠান খুলে ড্রামে করে তৈল এনে বিক্রি করছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। এতে করে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

কয়েকজন ক্ষুদ্র পেট্রোল ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে তারা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আমাদের ফায়ার সার্ভিস-এর ছাড়পত্র ও অনুমোদন আছে। আবার মাঝেমধ্যে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলে কোনো সমস্যা হয় না। 

লক্ষ্মীপুর সদরের বিভিন্ন হাটবাজার, দালালবাজার, জকসিন, মান্দারী, পালেরহাট, দত্তপাড়া, কুশাখালী, চররুহিতা, বশিকপুর, চররমীন মোহন, শাকচর, ভবানীগঞ্জ, তেওয়ারীগঞ্জ, হামছাদী বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বোতলজাত করে বিক্রি করছেন পেট্রোল। এসব দোকান থেকে মোটরসাইকেল ও  অন্যান্য যানবাহনের চালকরা পেট্রোল কিনে নিচ্ছেন অবাধে।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, হাতের নাগালে পেট্রোল বিক্রি করায় সন্ত্রাসীরা অহরহ পেয়ে থাকে এবং এতে খুব সহজে সন্ত্রাসীরা নাশকতার কাজে পেট্রোল ব্যবহার করতে পারে। অতি দ্রুত প্রশাসনের কাছে এ দাহ্য পদার্থ সড়ক পাশে বিক্রি বন্ধের দাবি জানান তারা।

 

 


 
জানা গেছে, জ্বালানি তেল বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধা-পাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইসেন্সসহ অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে লক্ষ্মীপুর জেলায় যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে এসব জ্বালানি তেল। 

জনবসতি কিংবা যেখানে বসতি বাড়ি ঘর রয়েছে সেখানে এসব জ্বালানি তেল বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও বিক্রেতারা তা মানছে না। তারা দুর্ঘটনা এবং প্রশাসনকে উপেক্ষা করেই মহাসড়ক, বাইপাশ সড়ক ও বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কের পাশে পেট্রোল,ডিজেল ও অকটেনসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেল বিক্রি করার কারনে একদিকে যেমন যেকোন সময় অনাকাঙ্খিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে, অন্যদিকে বখাটে, দুর্বৃত্তরাও সহজে হাতের নাগালে তেল পেয়ে তা দিয়ে কোনো না কোনো নাশকতার ঘটনাও ঘটাতে পারে। এসব তেল দাহ্য পদার্থ। তাই এটা নিয়ে যেকোন সময় দুর্বৃত্তরা নাশকতার সৃষ্টি করতে পারে। এরই মধ্যে এভাবে পেট্রোল বিক্রি করায় সন্ত্রাসীরা নাশকতার সুযোগ পায় বলেও অভিযোগ সচেতন মহলের। 

আর জনবসতি এবং বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় এমন জ্বালানি তেল বিক্রির কারণে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন সচেতন মহল। দুর্ঘটনা ও নাশকতা এড়াতে চাঁদপুরের বিভিন্নস্থানে এসব জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করতে জরুরি ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। 

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ পরিচালক  ফরিদ উদ্দিন জানান, যারা খোলা বাজারে এসব জ্বালানি তেল বিক্রি করছে, আমরাও তাদের বিপক্ষে। যারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তেল বিক্রি করছেন, তারা আগে জেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদন নিয়ে এলে তারপর আমরা তাদের লাইসেন্স দেই। এছাড়া যারাই তেল বিক্রির লাইসেন্স নেন, তারা যেনো অনাবাসিক এলাকা, অগ্নি নির্বাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং যেখানে কোনো বাড়ি ঘর, দোকান পাট ও জনবসতি নেই সেখানে তেল বিক্রির সে শর্ত অনুযায়ী তাদেরকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। 

লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান জানান, অনুমোদনহীন খোলা বাজারে যত্রতত্রে কোনো দোকান বসা, বিক্রি আইনত অপরাধ। এসব দোকানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন অভিযান চালালে পুলিশ সহযোগিতা করবে। একই সঙ্গে যারা অবৈধভাবে বিক্রির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এরই মধ্যে অভিযান চালানো হচ্ছে। এবং খোলাবাজারে পেট্রোল বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। কোনো ধরণের অপ্রতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়েও পুলিশ তৎপর রয়েছে।