চান্দিনা ও দেবিাদ্বার করোনা’র রেড জোন!

কুমিল্লার চান্দিনা ও দেবিদ্বার উপজেলাকে করোনা’র রেডজোন হিসেবে ঘোষণা করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। জেলায় সংক্রমনের শুরু থেকে এই দুই উপজেলায় করোনা আক্রান্ত পর পর বাড়তে থাকায় এই দুই উপজেলাকে রেড জোন হিসেবে ধরা হয়েছে। কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, চান্দিনা ও দেবিদ্বার উপজেলায় সংক্রমণের ধারাবাহিকতা (ইনফেকশন চেইন) একটির সাথে আরেকটি সম্পৃক্ত। আর প্রথম দিকে এই এলাকাগুলোতে যারা আক্রান্ত হয়েছিলো তাদের মাধ্যমেই মূলত এই সংক্রমণের শুরু বলে ধরা হচ্ছে। এই দুই উপজেলা থেকে গণহারে নমুনা সংগ্রহ করে সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আহমেদ কবির জানান, কুমিল্লার দেবিদ্বারে করোনা পজেটিভ হয়ে মৃত্যুবরণ করা নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা জীবন কৃষ্ণ থেকেই সংক্রমনের শুরু বলে আমরা ধারণা করছি। তিনি মারা যান গত ১০ এপ্রিল। এরপর গত ২১ এপ্রিল করোনায় মারা যান শাহজালাল মেম্বার ও ৩০ এপ্রিল মারা যান  হোমিও চিকিৎসক সুকুমার চন্দ্র দে। তাদের কাছ থেকে যাা সংক্রমিত হয়েছেন বা তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তারা যে সব জায়গায় চিকিৎসা গ্রহন করেছেন বা গিয়েছেন সেসব জায়গা গুলো বের করে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এপর্যন্ত দেবিদ্বার থেকে মোট ৯০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল আসা ৭২ জনের মধ্যে ১৫ জনের পজেটিভ (শণাক্ত) এসেছে। এরমধ্যে মারা গেছেন ৩ জন। বর্তমানে আক্রান্ত ১২ জনের মধ্যে একজন প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছে। বাকিরা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখনো কেউ সুস্থ হন নি। তবে তারা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছেন আহমেদ কবির।  

চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিলু আহসান জানান, চান্দিনায় সংক্রমনের সূত্রপাত দেবিদ্বারের মারা যাওয়া জীবন কৃষ্ণ থেকেই হয়েছে বলেই আমরা ধারানা করছি। তিনি চান্দিনার একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে এনে শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়েছেন। এর পর থেকে তার সংশ্লিষ্টরাই মূলত আক্রান্ত হচ্ছেন। এপর্যন্ত চান্দিনা   থেকে ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ৯২ জনের ফল এসেছে যার মধ্যে আক্রান্ত শণাক্ত হয়েছেন ০৯ জন এবং মারা গেছেন একজন। সুস্থ হয়েছেন ৩ জন। বাকি ৫ জন আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং তারাও দ্রুত সুস্থ হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

জেলা সংক্রমণ প্রতিরোধ সমন্বয়ক নিস্বর্গ মেরাজ চৌধুরী জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, কুমিল্লার চান্দিনা ও দেবিদ্বার উপজেলায় সংক্রমের হার বেশি। এছাড়া এই উপজেলাগুলোতেই শুরু থেকে সংক্রমের প্রমাণ মিলেছে। আর এসব সংক্রমনের ধারা এক জায়গা থেকে বলেই ধারনা করা হচ্ছে। এই সংক্রমণ এখন “কমিউনিটি লেভেল” (সামাজিক পর্যায়ে)। যে কারনে এই সব জায়গা গুলোতে লক ডাউন জোরদার বা কারফিউ থাকা জরুরি। না হয় এই সংক্রমণ অন্য উপজেলাগুলোতেও ছড়াতে সময় নিবে না। এই দুই উপজেলার হট স্পট হচ্ছে চান্দিনা বাজার এবং চান্দিনা উপজেলা ধানসিঁড়ি গ্রাম। এই জায়গাগলোতে অবশ্যই প্রশাসন কঠোর হতে হবে।