ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চিকিৎসার নামে প্রতারণা: সব রোগের ওষুধ, বিফলে মূল্য ফেরত!

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

কুমিল্লায় সব রোগের ওষুধ বিক্রি করে থাকেন আলমগীর হোসেন। এই ওষুধের জন্য কোনো টেস্ট বা পরীক্ষা করাতে হয় না। রোগীর কথা শুনেন আর ওষুধ দিয়ে থাকেন। তার এসব ওষুধ কোনো কোম্পানির নয়, সবই বিভিন্ন গাছগাছালির।  

সপ্তাহের একেকদিন জেলার ১৭টি উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বসেন তিনি। চারদিকেই থাকে ওষুধ ও ঔষধি গাছের নানান পসরা সাজান।

শনিবার কুমিল্লা রানীর বাজারে ঘরোয়া হোটেল সংলগ্ন এলাকায় দেখা যায়, বহেরা, আমলকি, হরিতকি, অর্শ্বগন্ধা, আকন্দপাতা, ধুতরা, কালোজিরা, ঘৃতকুমারী, অর্জুন, পুদিনা, নিমপাতা, লবঙ্গ, নয়নতারা, তুলশী, বাসক, অন্তমূলসহ আরো কতো ভেষজ গাছগাছালি মিশিয়ে হালুয়া বানিয়ে রোগীর অপেক্ষায় আছেন তিনি।

সর্ব রোগ আরোগ্য হয় এমন বক্তব্য নানা রঙ্গে, ঢংয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। মাটির উপর বিছানা বিছিয়ে তার অস্থায়ী ফার্মেসি। অনেকে কাছে এসে বক্তব্য শুনে ফ্রি এক ডোজ ওষুধ খেয়ে চলে যাচ্ছে।

কেউতো আপনার ভেষজ ওষুধ কিনছে না এমন প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, সব সময় তো ব্যবসা এক রকম যায় না। বংশগত ভাবেই এই ব্যবসা করে থাকি। দাদা এই ব্যবসা করেছেন, এরপর বাবা। বাবার পরে আমি। এক ভাই চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ব্যবসা এখন খারাপ যাচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য কি কি রোগের উপকার হয় জানতে চাইলে তিনি কিছুটা বিরক্ত স্বরে বলেন, আপনিতো রোগের কথাটা বলেন না। খালি নানান রকম কথা জানতে চাইতেছেন। রোগ দিছে আল্লাহ সারাবেনও তিনি। আমরা উছিলা মাত্র। আল্লাহর রহমতে একজন মানুষের শরীরে এমন কোনো রোগ নেই যার চিকিৎসা বিভিন্ন গাছগাছালি দিয়ে হয়না। এটাকে বলে প্রাকৃতিক চিকিৎসা।

মানুষ আপনার ওষুধ খেয়ে ভালো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপকার না হলে রোগীরা আমাদের কাছে কেনো আসে। আর আমাদেরই এই ব্যবসাই বা কিভাবে টিকে আছে।

আলমগীরের সঙ্গে কথা বলার সময় দেবিদ্বার উপজেলার বড় আলমপুর গ্রামের আলী আহসানের ছেলে ভ্যানচালক খুরশিদ আহমেদ বলেন, স্যার এদের কথা বিশ্বাস করবেন না। এরা এক জায়গায় প্রতিদিন বসে না। এক সময় একেক জায়গায় বসে। মানুষ ওষুধ কেনার সময় বলবে এখানে আমাকে প্রতিদিন পাবেন। উপকার না হলে জানাবেন। পরের সপ্তাহে এসে দেখি এখানে সে নাই।

ধর্মপুর এলাকার আলী হোসেন বলেন, তারা সারাক্ষণ ক্যাসেট বাজিয়ে রাখেন। ক্যাসেটে বলতে থাকেন এই গাছগাছালি সম্পর্কে ইসলাম কি বলছে ইত্যাদি। নবী ও রাসুলরাও যে গাছগাছালির সেবা নিতেন সে কথা বলে সাধারণ মানুষকে তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে প্রতরাণা করছে।

আপনার এই ওষুধের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি না জানতে চাইলে আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেলস্টেশনের আরেক ভেষজ ওষুধ বিক্রেতা জালাল উদ্দিন বলেন, বৈজ্ঞানিক টৈজ্ঞানিক জানি না। আমার বড় ভাই এই ব্যবসা করছে আমিও করতেছি। কমবেশি মানুষ উপকার পাচ্ছে। না পাইলে সারা দেশে হাজার হাজার ব্যবসায়ী আছে এটা করেই খায়। তাদের ব্যবসাতো আর টিকতো না।

আপনাদের ক্রেতা কারা জালালের কাছে জানতে চাইলে বলেন, শিক্ষিত মানুষ বা বড় লোকেরা আমাদের কাছে আইয়ে না। গরীব, দিনমজুর, ছোট ছোট ফেরিওয়ালা, রিকশা চালক আমাদের ক্রেতা।

কোন রোগী বেশি আসে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বপ্নদোষ, কোমর ব্যাথা, মাজা ব্যাথা, ডায়বেটিকস,পেট ব্যাথা, চুলকানি, আলসার, বুক জ্বালা এসব রোগী বেশি আইয়ে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মো. মজিবুর রহমান বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এসব চিকিৎসার কোনো ভিত্তি নেই। এক সময় শিক্ষার হার কম ছিল, মানুষ সচেতন ছিল না, তাই এই ব্যবসা জমজমাট ছিল। ধীরে ধীরে
মানুষ শিক্ষিত হচেছ, সচেতন হচেছ। এখন আসল নকল চিনতে পারে। তাই আগের তুলনায় এসব ব্যবসার চাহিদা কমে গেছে।