ব্রেকিং:
কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা জিয়াউর রহমান যেভাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে চেয়েছি চলতি হজ মৌসুমে প্রথম বাংলাদেশী হজযাত্রীর মৃত্যু শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ধর্ম অবমাননা কুবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ ‘পিডাইয়া লম্বা করে দেওয়ার নির্দেশ’ ফুলবাড়িতে সীমান্তে ঢুকে বিএসএফের গুলিবর্ষণ অভিযানে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ধরে, ‘শিশুকে আঘাত’ করে পুলিশ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান রাতেই কুতুবদিয়ায় নোঙর করবে এমভি আব্দুল্লাহ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সিন্ডিকেটের থাবা প্রাণিখাদ্যের বাজারেও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল, সম্পাদক মুন নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ আজ বিশ্ব মা দিবস চাঁদপুরে মন্ত্রী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে আলোচনায় নাজিম কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
  • রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ছিন্নমূল মানুষকে সেহরি খাওয়ান উদ্যমী যুবকরা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২ মে ২০২০  

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। কুমিল্লার এক দল উদ্যোমী তরুণ যারা নিজেদের জমানো টাকা ও সংগ্রহ করা টাকা দিয়ে রাতের শেষ প্রহরে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন অলিতে গলিতে ছুটে গিয়ে ছিন্নমূল ঘর হারা মানুষদের ঘুম থেকে উঠিয়ে তাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন সেহরি। 

সেহরি পেয়ে হতবিহবল অসহায় দরিদ্র মানুষগুলো ছেড়ে দিচেছন চোখের পানি। দুই হাত তুলে দোয়া করছেন তাদের জন্য। রমজানের প্রথম দিন থেকেই এই ব্যতিক্রমধর্মী মহৎ কাজটি করে যাচ্ছেন ‘কুমিল্লার জন্য আমরা’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। 

ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এই মহৎ কাজটি তারা করে যেতে যান চান বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা। মধ্যরাতে খাবার নিয়ে শহরের শাসনগাছা, চকবাজার ও জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনাল, রেলের প্লাটফর্ম আর রাস্তায় ঘুরেছে একদল তরুণ। 

উদ্দেশ্য ছিন্নমূল মানুষের মাঝে সেহরি বিতরণ। প্রতিদিন ৩৫০ জন মানুষের জন্য খাবার তৈরি করা হয়। বাসা-বাড়ির রান্না করা খাবার নিয়ে বক্সে করে ভাসমান মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেন। রাত একটা থেকে তিনটা পর্যন্ত চলে এ কার্যক্রম। মানবতার এমন চিত্রের দেখা মিলে কুমিল্লা মহানগরীতে। 

 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিডি ক্লিনার-কুমিল্লা, মা-বাবা ফাউন্ডেশন-বুড়িচং, প্রদীপ শিখা, আশরাফী লঙ্গরখানা, দানশালা ফাউন্ডেশনসহ স্থানীয় কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা একত্রিত হয়ে এ মহৎ কাজটি করে যাচ্ছেন। 

কুমিল্লা শহরের শাসনগাছা, পুলিশ লাইন, ফৌজদারি মোড়, বাদুরতলা, কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, চকবাজার, মোগলটুলি, টমচমব্রীজ, মেডিকেল রোড, জাঙ্গালিয়া, পদুয়ার বাজার, রাণীর বাজারসহ শহরের বিভিন্ন গলি ও বস্তিতে খাবার বিতরণ করেন তারা। 

যুবকদের সম্মিলিত এ প্রয়াসের নাম ‌‌‌‘কুমিল্লার জন্য আমরা’। এ নামে ফেসবুকে রয়েছে পেজ ও গ্রুপ। দৈনন্দিনের কার্যক্রম জানান দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পহেলা রমজান থেকে শুরু হয়ে মাসব্যাপী চলবে এ আয়োজন। 

এ সব সদস্যদের স্বেচ্ছাশ্রম আর মানুষের দানের টাকায় ক্রয় করা হয় বাজার সদাই। ঘরেই রান্না করা হয়। সাদামাটা আয়োজনে থাকে সাদা ভাত, ডাল আর মুরগীর গোস্ত অথবা মাছ-সবজি সঙ্গে বোতলজাত খাবার পানি। ব্যক্তিগত একটি প্রাইভেট কার, একটি অটো আর ভাড়া করা একটি সিএনজি আটো রিকশায় করে তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে বেড়িয়ে যান স্বেচ্ছাসেবীরা। 

কুমিল্লার জন্য আমরা স্বেচ্ছাসেবী দলের সদস্য তাওসীফ আহমেদ জীবন ও ফাহিম রহমান জানান, বর্তমানে করোনার প্রাদুর্ভাবে মানুষ কর্মহীন। ফলে ছিন্নমূল ও ভবঘুরে মানুষ ঠিক মতো খাবার ও সাহায্য পান না। গরিবরা ঠিক মতো খেতে পায় না। আমাদের ক্ষুদে প্রয়াস পবিত্র রমজান মাসে সেহরি যেন সব মানুষ খেতে পারে চেষ্টা করে যাচ্ছি। যে কেউ সময় দিয়ে বা আর্থিকভাবে আমাদের সাহায্য করতে পারেন।  

রাস্তার পাশে ঘুমন্ত মানুষকে ডেকে, যারা রাতে নগরীতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন, হোটেল বন্ধ রাস্তায় বের হয়েছেন এমন মানুষদের আমরা খাবার দিয়ে থাকি। 

সংগঠনের সদস্য তাওসীফ আহমেদ জীবন ও ফাহিম রহমান আরো জানান, আমাদের এই সংগঠনে নেতা কেউ নেই। সবাই মানবতার কর্মী। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, সংযমের মাসে কেউ যেন সেহরির অভাবে অভুক্ত থেকে রোজা না রাখে কিংবা সেহরির অভাবে কেউ যেন রোজা রাখা থেকে বঞ্চিত না হয়। 

কিভাবে এই ব্যতিক্রম কাজ জড়িয়ে পড়লেন জানতে চাইলে এই দুই সংগঠক জানান, প্রথমে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে চিন্তা করলাম, সব সবময় তো রমজানে সেহরির সময় শহরের বড় বড় হোটেল গুলো খোলা থাকে। তখন অনেক ছিন্নমূল মানুষকে দেখি হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে একটু ভাত ডাল চেয়ে খেতে। কিন্তু এবার তো সব বন্ধ। তাই আমরা নিজেদের জমানো টাকা দিয়েই প্রথম শুরু করি। পরে আমাদের এই ভাল কাজ দেখে অনেকেই এগিয়ে আসেন। তারা আমাদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন। সেই সামর্থ্যবান মানুষের অর্থ দিয়ে গরিব মানুষদের এক বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। 

সংগঠনের তহবিলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানান তারা।