তেলাপোকা মারার বিষ-মাখানো মিষ্টি এনে দেন সফিউল্লাহ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মো. ইয়াছিন খান (৭) ও মো. মোরসালিন খান (৫) নামে দুই ভাইকে হত্যা করতে মিষ্টির সঙ্গে তেলাপোকা মারার বিষ মেশানো হয়। মা রিমা বেগমের পরকীয়া প্রেমিক মো. সফিউল্লাহ ওরফে সোফাই সর্দার বিষ-মাখানো মিষ্টি দিয়ে যান।

হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সফিউল্লাহ এসব কথা বলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (দ্বিতীয় আদালত) আফরিন আহমেদ হ্যাপির আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন।

সফিউল্লাহ আশুগঞ্জ উপজেলার মৈশার গ্রামের শামছু মিয়ার ছেলে। এর আগে গত সোমবার ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকার একটি বাস কাউন্টারের সামনে থেকে সফিউল্লাকে গ্রেফতার করে আশুগঞ্জ থানার পুলিশ। পরে রাতে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সফিউল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। রাতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, সফিউল্লাহ ও ওই দুই শিশুর মা রিমা বেগমের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই শিশুকে হত্যা করলেই তাদের দুজনের বিয়ে করতে সুবিধা হবে চিন্তা করে দুজন মিলে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিমাকে তেলাপোকা মারার বিষ মেশানো মিষ্টি এনে দেন সফিউল্লাহ।

মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরো বলেন, দুই শিশুর মা রিমা বেগম হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সফিউল্লাহ জবানবন্দিও ঠিক একই। তারা সহজে বিয়ে করার জন্যই দুই শিশুকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করেন এবং ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয় বলে প্রচার করেন।

গত ১০ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন ওরফে সুজন খানের দুই শিশুসন্তান ইয়াছিন খান ও মোরসালিন খান হত্যার শিকার হয়। প্রথমে শিশুদের মা জানায় জ্বর থাকায় নাপা সিরাপ খাওয়ানোয় তাদের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে আশুগঞ্জ থানার পুলিশ শিশুদের মা রিমা বেগমকে ১৬ মার্চ গ্রেফতার করে।