ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নাম বদলেও পিছু ছাড়ছে না খেলাপি ঋণ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

নানা অনিয়মের অভিযোগে ফারমার্স ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক করা হলেও পিছু ছাড়ছে না খেলাপি ঋণ। গত অর্থবছরে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকটি। এক বছরে পদ্মা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৯০ কোটি টাকা বাড়লেও আগের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে দাবি করেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরু।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ গত অর্থবছরের চেয়ে ২ হাজার কোটি টাকার উপরে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে আদায় অযোগ্য কুঋণের পরিমাণও। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঢালাওভাবে ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে সার্বিক ব্যাংক খাতেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। যার প্রভাব থেকে বের হতে পারেনি পদ্মা ব্যাংকও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এবি ব্যাংকের পরই অর্থাৎ দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে পদ্মা (সাবেক ফারমার্স) ব্যাংক। ২০১৮ সালের জুন মাসে পদ্মা (ফারমার্স) ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৫২১ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের জুন মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে পদ্মা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯০ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে খেলাপি ঋণের যে তথ্য জানা গেছে, তা ভয়াবহ। এতে সার্বিক ব্যাংক খাতের দুরবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি এবারই প্রথম বেসরকারি ব্যাংকেরও খেলাপি ঋণের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। আর পদ্মা (ফারমার্স) ব্যাংকের বিরুদ্ধে তো অনেক আগে থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিলই। সে অবস্থা থেকে ব্যাংকটির বের হতে না পারা খুবই হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে পদ্মা ব্যাংকের  ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরু বলেন, নতুন কোন ঋণ দেয়া হয়নি। এটা আগে থেকেই ছিল। আমাদের ফাংকশনাল অডিট যখন শেষ হলো তখন অ্যাকচুয়াল হেলথ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা আমরা ফাইন্ডআউট করেছি। এখন এগুলো রিকভারি করার কাজ চলছে। সেই সঙ্গে ঋণ আদায় ও ডিপোজিট বাড়ছে বলেও  দাবি করেন মো.এহসান খসরু।

বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে গত ৩০ জুনের ভিত্তিতে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমানে পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) জুন শেষে খেলাপি ঋণ ১০০ টাকায় ৬৬ টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৫৩ টাকাই আদায় অযোগ্য অর্থাৎ কুঋণ। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, মোট ৫ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ৩ হাজার ৬১১ কোটি টাকাই খেলাপি হয়ে পড়েছে।

তবে খেলাপি ঋণ আদায়ে নানা রকম উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরু। তিনি বলেন, থার্ড পার্টির মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায়ে কাজ চলছে। এই আউটসোর্সের টিম  ডকুমেন্টস নিয়ে কাজ করবে। লিগ্যাল আর রিকভারি একইসঙ্গে চলছে। তিনি জানান, এ বছর প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার মতো ঋণ রিসিডিউল করা হয়েছে। ক্যাশ রিকভারি আছে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটি বাঁচাতে সরকারের উদ্যোগে মালিকানায় যুক্ত হয়েছে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। তবে এতো উদ্যোগে পরও পরিস্থিতি আগের মতই রয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যাংকের এমডি এহসান খসরু বলেন, সরকারি ডিপোজিট এসেছে মাত্র ৭১৫ কোটি টাকা। এখন আমাদের তিন থেকে চারশ কোটি টাকা ব্যালেন্স থাকে। সিআরআর মেইনটেইন করা হচ্ছে এখন, যেটা আগে ছিল না। আমানতকারীদের চাহিদা অনুযায়ী সবাইকেই শতভাগ পেমেন্ট করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোর তালিকায় দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের নাম পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২০১২ সালে অনুমোদন পাওয়া নতুন ৯ ব্যাংকের একটি ছিল ফারমার্স (পদ্মা) ব্যাংক। কিন্তু চার বছরের মাথায় চরম সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। একপর্যায়ে পদ ছাড়তে বাধ্য হন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ব্যাংকটির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীমকেও অপসারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।