ব্রেকিং:
ধর্ম অবমাননা কুবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ ‘পিডাইয়া লম্বা করে দেওয়ার নির্দেশ’ ফুলবাড়িতে সীমান্তে ঢুকে বিএসএফের গুলিবর্ষণ অভিযানে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ধরে, ‘শিশুকে আঘাত’ করে পুলিশ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান রাতেই কুতুবদিয়ায় নোঙর করবে এমভি আব্দুল্লাহ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সিন্ডিকেটের থাবা প্রাণিখাদ্যের বাজারেও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল, সম্পাদক মুন নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ আজ বিশ্ব মা দিবস চাঁদপুরে মন্ত্রী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে আলোচনায় নাজিম কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঋণ শোধের সক্ষমতা অর্জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কুকি চিনের রক্তথাবায় বিপন্ন সবুজ পাহাড় জুলাইয়ে বেইজিং যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী একদিনের সফরে গোপালগঞ্জের পথে প্রধানমন্ত্রী
  • শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

‘পেটের ক্ষুধা তো দিবস বুঝে না’

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২ মে ২০২৪  

আব্দুর রশিদ মিয়া। বয়স ৫০ পেরিয়েছে। পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে। কৃষি কাজ করার মতো নিজের জমি বলতে কিছুই নেই। তাই জীবিকার প্রয়োজন দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন তিনি। কাজ করলে পেটে ভাত জোটে, আর কাজ না করলে অনাহারে কষ্ট করে থাকতে হয়। দিনমজুর আব্দুর রশিদ মিয়ার বাড়ি যশোর হলেও দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের বড় বাজার এলাকায় থেকে দৈনিক মজুরিতে কাজ করছেন তিনি।

শ্রমিক দিবস কী এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি তা জানি না। আমি জানি শুধু একটাই জীবিকার তাগিতে প্রতিদিনের ন্যায় কাজের সন্ধানে বের হওয়া। প্রতি বছর আমাদের মাঝে শ্রমিক দিবস এলেও এই দিনটি অন্য দিনের মতোই লাগে। তাই তো প্রতিদিনের মতো আজও সকাল থেকেই কাজ করছি। 

নারী শ্রমিক সালমা আক্তার বলেন, আজ থেকে ৫ বছর আগে আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা যায়। সংসারে এক মেয়ে রয়েছে। নেই কোনো জায়গা জমি। তাই কাজ করে খেতে হয়। পেটের ক্ষুধা তো দিবস বুঝে না। পেট ভরা থাকলে সবকিছুই ভালো লাগে। আমাদের মতো গরিবদের প্রতিদিনই দিবস। একদিন যদি বসে থাকি কে আমাদের খাবার জোগাবে? তাই দৈনিক মজুরিতে কাজ করতে এসেছি। প্রতিদিন কাজ থাকলেও মজুরিতে রয়েছে বৈষম্য।

এ গল্প শুধু দিনমজুর আব্দুর রশিদ ও সালমার নয়; দারিদ্র্যপীড়িত এ উপজেলার অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষের।

সরেজমিনে পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, রাধানগর ও মসজিদপাড়াসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরমধ্যে কেউ করছেন নির্মাণকাজ, কেউ করছেন মাটি কাটার কাজ, আবার কেউ বা করছেন কৃষিসহ দৈনিক মজুরিতে নানান কাজ। আজ মে (শ্রমিক) দিবস। ঢাক ঢোল পিটিয়ে শ্রমিক দিবস উদযাপিত হলেও জীবিকার প্রয়োজনে দৈনিক মজুরিতে নানা জায়গায় কাজ করছেন শ্রমিকরা।

 

ধান কাটছেন শ্রমিকরা

ধান কাটছেন শ্রমিকরা

কসবা এলাকা থেকে আখাউড়ায় কৃষি কাজ করতে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একদিন কাজ না করলে আমার সংসার চলা দায় হয়ে যায়। দিনমজুরি করি, যা পাই তা দিয়ে কোনোমতে জীবন বাঁচাই। আমার পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ চার সদস্য রয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে ধান শুকানোর কাজ করছি। আজ যে ‘মে দিবস’ তা জানি না। আপনার মাধ্যমে শুনলাম। এ জন্যতো আর কাজ বন্ধ রাখলে চলবে না। 

নির্মাণ শ্রমিক লিয়াকত বলেন, গত রাতে এক নেতা বলে ছিলেন আজকে শ্রমিক দিবসে র‌্যালি হবে থাকার জন্য। কিন্তু কাজ ফেলে কিভাবে আসি। একদিন কাজ না করলে সংসারতো চলে না। আমাদের মতো যারা দিন আনে দিনে খায় তাদের এ দিবসে যাওয়া মানায় না।

নারী শ্রমিক জরিনা বেগম বলেন, এক সন্তান রেখে স্বামী অন্যত্র চলে গেছে। গত ৩ বছর ধরে সন্তানের কোনো খোঁজ খবর রাখে না। শুনেছি সে আরো একটা বিয়ে করেছে। সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে দৈনিক মজুরিতে নানা জায়গায় কাজ করছি। কাজ ছাড়া চলা খুবই কষ্ট। সন্তানের জন্য রাতদিন কাজ করতে হয়।

 

ভ্যানে বালু তোলার কাজ করছেন শ্রমিকরা

ভ্যানে বালু তোলার কাজ করছেন শ্রমিকরা

ইজিবাইক চালক বাদশা মিয়া বলেন, প্রতিদিন সকালে অটো নিয়ে বের হই। রাতে বাড়িতে ফিরি। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাই। আজ ‘মে দিবস’ এটা শুনেছি। তবে এই দিবসে কী হয়, কেন হয়; তা কিছুই জানি না। অটোর চাকা একদিন না ঘুরলে পেটতো চলবে না।

আখাউড়া সচেতন নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আর্থসমাজিক উন্নয়নে যারা দৈনিক মজুরিতে কাজ করছেন তাদের খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তবে মজুরির ক্ষেত্রে নারী পুরুষ উভয় সমান হওয়া উচিত।