ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় ভয়াল ১২ নভেম্বর

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০১৯  

আজ ১২ নভেম্বর। ১৯৭০ সালের এই রাতে ঘূর্ণিঝড় গোর্কির ছোবলে লন্ডভন্ড হয় ভোলার বিস্তীর্ণ এলাকা। জেলার মনপুরা, চর নিজাম, ঢালচর ও চর কুকরি-মুকরিসহ গোটা এলাকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। কত মানুষ যে সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলো তার সঠিক হিসাব জানা নেই কারো।

তবে স্থানীয়দের মতে মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখের অধিক হবে। সেদিন এমন কোনো গ্রাম ছিলো না, যে গ্রামের কেউ মারা যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় গাছে উঠে প্রাণে বেঁচেছেন অনেকে। সেদিনের ভয়াবহ স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি ভোলাবাসী। সেদিনের কথা মনে পড়লে এখনো আঁতকে উঠেন তারা। দুর্যোগ মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করলেও এখনো সিগনাল দেখলে ভয় পান ৭০ সালের প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘূর্ণিঝড়ে স্বজনহারা আলীনগর এলাকার মো. মনির বলেন, আমার তিন বোনকে হারিয়েছি। তাদের কথা মনে করে আজো আমরা কাঁদি।

প্রত্যক্ষদর্শী তুলাতলী এলাকার বাদশা মিয়া বলেন, মেঘনা নদী দিয়ে মানুষের মরদেহ ভাসতে দেখেছি। পরিচিত কাউকে উদ্ধার করেছি। বাকি মরদেহ স্রোতে ভেসে গেছে।

স্থানীয় রহমত আলী, ছিদ্দিক ও সিরাজ উদ্দিন বলেন, সেদিনের ঝড়ে মদনপুরের ১৮টি ঘরের মধ্যে ৪০ জনের মরদেহ পাওয়া যায়। একটি পরিবারে কেউ বেঁচে ছিলেন না।

প্রত্যক্ষদর্শী শাহে আলম বলেন, সেদিন দিনভর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ছিল। রাতে পুরোদমে ঝড় শুরু হয়। ভোরে জলোচ্ছ্বাসে মানুষ মারা যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মনপুরা, চরফ্যাশন, লালমোহন উপজেলায়।

প্রবীণ সাংবাদিক ও দৈনিক বাংলার কন্ঠ সম্পাদক এম হাবিবুর রহমান বলেন, বন্যার পরে সাপ আর মানুষ দৌলতখানের চৌকিঘাটে জড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি। স্নেহময়ী মা তার শিশুকে কোলে জড়িয়ে পড়েছিল মেঘনার পাড়ে। সোনাপুরের বাগানে গাছের ডালে এক নারীর মরদেহ ঝুলতে দেখেছি। এমনিভাবে মনপুরা, চরফ্যাশন, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও দৌলতখানসহ সমগ্র জেলায় মানুষ আর গবাদিপশু সেদিন বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলে ভেসে গেছে। মানুষ শূণ্য হয়ে পড়েছিলো দ্বীপ জেলা ভোলা।

প্রবীণ সংবাদিক এম এ তাহের বলেন, ভয়াল সে রাত কেটে গেলে পরদিন শুক্রবার শহরময় ধ্বংস স্তুপ দেখা যায়। প্রায় কোমর পানি ছিলো সর্বত্র। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল শুধু মরদেহ আর মরদেহ। ওই সময় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহাজানসহ আরো অনেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বেড়িয়ে পড়েন। সেদিন সবাই মিলে প্রায় সাড়ে ৩০০ মরদেহ দাফন করি।

এদিকে উপকূলবাসীদের অভিযোগ, উপকূলে একের পর এক দুর্যোগ আঘাত হানলেও আজো টেকসই বেড়িবাঁধ বা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ হয়নি। প্রতিবছরই ঝড় আসে। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু এখানের মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে ভোগে। ঝড় বা ঘূর্ণিঝড় আসলে মৃত্যু তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়।