ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রেমের পরিণতি মৃত্যু, খবর শুনে বাবাও না ফেরার দেশে

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৩  

কুমিল্লার আদর্শ সদর এলাকার মাঝিগাছা গ্রামে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসে প্রেমিকার বাবা ও চাচার পিটুনিতে আহত হয়ে মারা গেছেন মোহাম্মদ মাহীন (২২) নামে এক যুবক। এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবরে আধাঘণ্টার ব্যবধানে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন মাহিনের বাবা হিরন মিয়া (৫৫)। 

রোববার (৭ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানার ছত্রখীল ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতদের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর উপজেলার মধ্য মাঝিগাছা গ্রামের মোজা মিয়ার কন্যা তন্নী আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই এলাকার স্থানীয় চা-দোকানি হিরন মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ মাহিনের সাথে । এরই সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে তন্নীর সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে আসেন মাহিন।  এসময় তন্নীর বাবা এবং চাচা জাহাঙ্গীর আলম মাহিনকে ধরে ব্যাপক মারধর করে। একপর্যায়ে তারা ইট দিয়ে মাহিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মাহিনকে  তার আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে দুই দিন চিকিৎসা নিয়ে রোববার বেলা এগারটার দিকে বাড়িতে ফেরেন মাহিন।

বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পর তার বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয় এবং মাথা ঘুরে পরে যায়। এরপর আবারও তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছেলের মৃত্যুর খবর সইতে না পেরে মাহিনের বাবা বুকে ব্যাথা অনুভব করলে তাকেও কুমেক হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহত মাহিনের প্রেমিকা নুসরাত জাহান তন্নি বলেন, রমজান মাসের শুরুর দিকে আমি ও মাহিন আদালতে মাধ্যমে বিয়ে (কোর্ট ম্যারেজ) করি।  বৃহস্পতিবার রাতে মাহিন আমাকে তার সাথে দেখা করতে বলে।  সে প্রেক্ষিতে রাত এগারোটার দিকে সে আমাদের ঘরের সামনে আসলে আমার বাবা ও চাচা জাহাঙ্গীর আলম তাঁকে ধরে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের পর তারা ইট দিয়ে মাহিনের বুক ও মাথা থেতলে দেয়। ধস্তাধস্তি শুনে আমি ঘরের বাইরে এসে দেখি মাহিন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কিন্তু আমি যেন চিৎকার করতে না পারি এজন্য আমার চাচি আমার মুখ চেপে ধরে। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই, আর কিছু বলতে পারব না। 

তন্নী বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর আজ সে বাড়ি ফিরে কিছুক্ষণ পর সে বুকে ব্যথা অনুভব করে এবং একটু পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। যারা আমার মাহিনকে খুন করেছে তাদের ফাঁসি চাই। 

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তন্নীর বাবা মোজাম্মেল ও তন্নীর চাচা জাহাঙ্গীর মাহিনকে বেধড়ক মারধর করেছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।  সেখানে চিকিৎসা নিয়ে রোববার সে বাড়ি ফিরে। কিন্তু একটু পরেই পুনরায় বুকে ব্যথা অনুভব করে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েন তার বাবা হিরণ মিয়া। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হই। কিন্তু টিক্কারচর ব্রিজের কাছে যাওয়ার পরেই হিরণময়ী ও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মাহিন এবং হিরন  মৃত্যুর পর   তন্নীর বাবা ও চাচা পরিবারের সদস্যরা সবাই আত্মগোপনে চলে গেছে। 

তিনি বলেন, একটি সামান্য ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি এলাকাবাসীকে ব্যথিত করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কামরান হোসেন এবং কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সনজুর মোরশেদ খান।  

তারা  বলেন, মাহিনের মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা নিহতদের স্বজন ও মাহিনের প্রেমিকার সাথে কথা বলেছি। তন্নীর ভাষ্য, রমজানের শুরুর দিকে তারা কোর্ট ম্যারেজ করেছিলেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। 

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় কারা জড়িত এবং কোন আঘাতে মাহিনের মৃত্যু হয়েছে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।