বুড়িচংয়ে ২শ বছরের পুরোনো খালে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়ন এর শিকারপুর গ্রামের রাস্তার পাশ দিয়ে বহমান সরকারি ২০০ বছরের পুরানো একটি খাল ড্রেজার মেশিন দিয়ে  মাটি  ভরাট করে স্থানীয় এক পশু ডাক্তার সজিব নামের এক ব্যক্তি স্থাপনা নির্মাণ করার কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়  জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়ন এর নিমসার- কংশনগর সড়কের পাশে শিকারপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার জসিম উদ্দিনের বাড়ির  সামনে প্রবাহমান ২০০ বছরের একটি পুরানো  (মধ্য পাড়ার) জৈন্তার খালের সাথে সংযোগ খালটি এলাকার ময়নামতি ইউনিয়ন ও মোকাম ইউনিয়ন এর প্রায় ২০ টির উপরের গ্রামের বর্ষার  সময় বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হয়।

এছাড়া এ খালের জমানো পানি দিয়ে এলাকার কৃষি জমিতে সেচ কাজ করে বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করা হয় । খালটি এলাকার চিহ্নিত কিছু লোক ধীরে ধীরে ভরাট করে  খালটি সংকোচিত করেছেন। যার ফলে এলাকার পানি প্রবাহিত না হওয়ায় জমিতে  পানি জমে কৃষি উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে ।

স্থানীয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ জহিরুল ইসলাম সহ এলাকার একাধিক ব্যক্তি  জানান এই খালটি দিয়ে এলাকার লোকজন নৌকায় করে কৃষি পণ্য বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে  যেতেন স্বাধীনতার সময় পর্যন্ত।  খালটি গভীর ছিল যার ফলে নৌকা দ্রুত চলত এবং ২০-২৫ টি গ্রামের বৃষ্টির পানি এখাল দিয়ে সরে যেত। বর্তমানে এলাকার কিছু লোক খালটির বিভিন্ন স্থানে ধীরে ধীরে ভরাট করে বাড়ি ঘর স্থাপনা নির্মান করার ফলে পানি প্রবাহের গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর খালটি আস্তে আস্তে মরা খালে পরিনত হচ্ছে। যার ফলে কৃষি জমিতে সেচ কাজেও সময় মতো পানি পাওয়া যায় না।

অন্য দিকে এভাবে খাল দখল ও ভরাটের ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয় চরম ভাবে। এলাকার সচেতন মানুষ  আহবান জানান, খালটি সংস্কারের। ভূমি দূস্যদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য  জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন পাশাপাশি খাল  দখল কারী ভূমি দূস্যদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান।  

এদিকে শিকারপুর গ্রামের মো. মোস্তফা কামাল এর ছেলে পশু ডাক্তার সজিব ওরফে সৈকত দীর্ঘদিন ধরে এলাকার পুরানো খালটি ড্রেজার মেশিনে মাটি কেটে এনে অবৈধ ভাবে ভরাট করছে। এতে এলাকাবাসী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

অভিযুক্ত পশুর ডাক্তার সজিব ( সৈকত) বলেন, তো আমি সরকারি খালটি যে টুকু দখলে নিয়েছি তা মাপ ঝুপের পর জায়গাটি ভরাট হয়েছে । যেটুকু জায়গা দখল হয়েছে তা দুই এক ফুট দখল  হতে পারে। ভেকু দিয়ে কাটার পর এমন হয়েছে। যদি ও খালটি দখল হয়ে থাকে তাহলে আমি সরকারি আমিন দিয়ে জায়গায়টি মাপ দিব। আমাকে একা দোষ দিয়ে লাভ নাই, অন্যান্য দিক দিয়ে একত্রিংশ খাল নেই।

এ ব্যাপারে মোকাম ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশীলদার)  মো. মোর্শেদ আলম বলেন খবর পেয়ে আমি ঘটনা স্থলে গিয়ে ড্রেজার মেশিনের পাইপ ভাংচুর করে মাটি উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছি। খাল দখল ভরাট করা বিষয় ডাক্তার সজিব ওরফে সৈকত খালের কিছু অংশ ছালার বস্তা ফেলে দখল করেছে। তাকে দখল মুক্ত করতে বলা হয়েছে। সে ১৫ দিনের সময় চেয়েছে।

এ ব্যাপারে বুড়িচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ছামিউল ইসলাম বলেন এ বিষয়ে মোকাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহেব আলী  আমাকে জানান। আমি তহশিলদার (নায়েব)  মো. মোর্শেদ আলম কে পাঠিয় সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছি।