ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিকা নিতে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ বাণিজ্য

করোনার টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের জন্ম সনদ প্রয়োজন। সরাইল উপজেলায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজারেরও অধিক। টিকার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরই জন্ম সনদের জন্য চারদিকে দৌড়ঝাঁপ করছে শিক্ষার্থীরা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইচ্ছামতো তৈরি করেছে সনদ। তাদের বাণিজ্য করা এসব ভুয়া জন্ম সনদ এখন পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এতে নানা রকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার ছিল উপজেলার অরূয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণের নিবন্ধনের তারিখ। এ সময় ধরা পড়েছে ভুয়া জন্ম সনদ।

এগুলোর অধিকাংশই কম্পিউটার দোকান থেকে স্ক্যান করা ভুয়া সনদ। এই সনদগুলো অনলাইনে যাচাই করলে নাম ও জন্ম তারিখে গরমিল ধরা পড়ে। একজনের নাম দিলে চলে আসে আরেকজনের নাম। অরূয়াইল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাপলা আক্তার বলেছে, ‘আমার ভাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ তৈরি করেছেন। টিকার নিবন্ধন করতে গেলে অনলাইনে আমার ওই সনদ পায়নি। তাই টিকার নিবন্ধন করতে পারছি না।’ এই ঘটনার পর এখন আতঙ্কে আছেন অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দ্বিতীয় ডোজের নিবন্ধন করতে গিয়ে যদি তারাও এমন গরমিলের শিকার হয়? ভুয়া সনদের ভেড়াজালে তারাও পড়েছে কিনা এখনো নিশ্চিত নয় কেউ। সরজমিনে জানা যায়, সরাইল উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি কম্পিউটার দোকানে গ্রাফিক্স সফট্‌ওয়্যার ফটোশপ ব্যবহার করে এসব জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করছে একটি সিন্ডিকেট। ওইসব জায়গায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের স্বাক্ষর জাল করার ঘটনাও ঘটছে। জন্ম নিবন্ধনের গুরুত্বপূর্ণ ভুল সংশোধনের জন্য ওই চক্রটি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকিয়েছে। অরূয়াইল ইউপি সচিব নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও সচিবের সই ও সিল নকল করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করছে। আসলে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কম্পিউটার দোকান এ ধরনের কাজ করছে।’ পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা  মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভুয়া সনদের বিষয়ে অনেকবার অবগত করেছি। কোনো ব্যবস্থা নেননি। অনেক লোক প্রতারিত হচ্ছে। জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।’ সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, ভুয়া সনদ সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।