মতলবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান

মতলব উত্তর উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব বাগানের আগাম শীতকালীন সবজি। এর দ্বারা পরিবারের চাহিদা যেমনি মিটছে, তেমনি আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছে একটি কৃষক পরিবার।

চলমান করোনা মহামারী, বন্যাসহ নানা আপদকালীন সময়ে দেশে সবজি উৎপাদনে যেনো কোনো প্রভাব না পড়ে সে লক্ষ্যে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে প্রতি ইঞ্চি কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মতলব উত্তর উপজেলার বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ পতিত জমিতে স্থাপন করা হচ্ছে এই পারিবারিক পুষ্টি বাগান।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৪৩২টি বাড়িতে পুষ্টি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। এতে সরকারি প্রণোদনা হিসেবে প্রত্যেক কৃষককে ১৭ জাতের সবজির বীজ ও বাগান তৈরির আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ নগদ ১ হাজার ৯৩৫ টাকা করে দেয়া হয়েছে। পারিবারিক পুষ্টি বাগান তৈরি করতে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন কৃষি কর্মকর্তাগণ।

'বাড়ির পাশে বাগ-বাগিচা, শাক-সবজির চাষ, ফুল দেবে, ফল দেবে, পুষ্টি বারো মাস' এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ উপজেলায় গড়ে উঠেছে এসব পুষ্টি বাগান। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব বাগানের আগাম জাতের শীতকালীন সবজি।

হানিরপাড় গ্রামের কৃষক লাল মিয়া বলেন, 'বাগান তৈরির খরচ হিসেবে সরকারের কাছ থেকে ১ হাজার ৯৩৫ টাকা পেয়েছি। বাগান থেকে উৎপাদিত সবজি দিয়ে একদিকে যেমন আমার পারিবারিক সবজির চাহিদা মিটাতে পারছি, অন্যদিকে বাড়তি সবজি বাজারে বিক্রি করে আমার বাড়তি অর্থ আয় হচ্ছে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আঃ রব জানান, পারিবারিক পুষ্টি বাগান করতে কৃষক-কৃষাণীদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। আমরা চাষীদের সঠিক চাষ পদ্ধতির বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ পাভেল খান পাপ্পু বলেন, প্রতিটি পারিবারিক পুষ্টি বাগানে উৎপাদিত নানা রকমের বিষমুক্ত সবজি দিয়ে কৃষকরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজিগুলো বাজারজাত করে বাড়তি অর্থও আয় করছেন তারা।

কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, দেশে সবজি উৎপাদনে যোনো কোনো প্রভাব না পড়ে সে লক্ষ্যে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশ মতে বাড়ির আঙিনাসহ পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান তৈরিতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিনামূল্যে লাউ, সিম, ঢেঁড়স, ডাটা, ধনিয়া, চিচিংগা, পুঁই শাক, কলমি শাক, লাল শাক, পালং শাক, পেঁপে, মুলা, করল্লাসহ ১৭ ধরনের সবজি বীজ দেয়া হয়েছে। কৃষকরা পারিবারিক পুষ্টি বাগানের প্রতি যেভাবে আগ্রহী হচ্ছে, তাতে বুঝা যাচ্ছে সবুজ বিপ্লব ঘটবে।