ব্রেকিং:
কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা জিয়াউর রহমান যেভাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে চেয়েছি চলতি হজ মৌসুমে প্রথম বাংলাদেশী হজযাত্রীর মৃত্যু শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ধর্ম অবমাননা কুবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ ‘পিডাইয়া লম্বা করে দেওয়ার নির্দেশ’ ফুলবাড়িতে সীমান্তে ঢুকে বিএসএফের গুলিবর্ষণ অভিযানে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ধরে, ‘শিশুকে আঘাত’ করে পুলিশ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান রাতেই কুতুবদিয়ায় নোঙর করবে এমভি আব্দুল্লাহ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সিন্ডিকেটের থাবা প্রাণিখাদ্যের বাজারেও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল, সম্পাদক মুন নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ আজ বিশ্ব মা দিবস চাঁদপুরে মন্ত্রী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে আলোচনায় নাজিম কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
  • রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

রূপপুরে আট দিনে ৫ রুশ নাগরিকের মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

আট দিনের ব্যবধানে পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত পাঁচ রুশ নাগরিক মারা গেছেন। অল্প সময়ের ব্যবধানে এসব মৃত্যুর ঘটনায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। 

গত রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরোটনিকভ আলেকজান্দ্রা (৫৫) নামে এক রুশ নাগরিকের মৃত্যু হয়। তিনি প্রকল্পের ‘নিকিমথ’ নামের একটি রুশ সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কমর্রত ছিলেন। 

পুলিশ জানায়, ভোরোটনিকভ আলেকজান্দ্রা প্রকল্পের ‘গ্রিনসিটি’ আবাসিক এলাকায় একটি কক্ষে থাকতেন। রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে তাকে তার ফ্ল্যাটে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এক সহকর্মী। পরে গ্রিনসিটি ও রূপপুর প্রকল্পসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরবর্তীতে এ সম্পর্কে গ্রিনসিটি ও রূপপুর প্রকল্পের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। 

এর আগে গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেস্ট রোসেম নামে রুশ সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রুশ নাগরিক চুকিন পাভেল (৪৮) অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে  তাকে দ্রুত গ্রিনসিটি আবাসিক থেকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
 
অন্যদিকে একই দিন রাত ২টার দিকে তলমাসেফ ভাইয়াসেলভের (৫৯) নামের আরেক রুশ নাগরিকের মৃত্যু হয়। । তিনি ১৪ তলার সিঁড়ি থেকে পড়ে অজ্ঞান হন। পরে কোম্পানির নিজস্ব ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এছাড়াও গত ২ ফেব্রুয়ারি শাকিরভ আলেক্সেই ঘুমের মধ্যে এবং ২৮ জানুয়ারি ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বারচেনকো আলেক্সেইয়ের। তারা দুজনই এই প্রকল্পের কর্মী ছিলেন।

রূপপুর প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট ও কর্মরত একাধিক জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত একবছরে রাশিয়ান শ্রমিকদের অধিকাংশই মারা গেছেন ঘুমের মধ্যে অচেতন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে এদের অধিকাংশই মারা যাওয়ার দিনে মদ পান করেছেন। রূপপুর প্রকল্পের বিদেশি নাগরিকদের টার্গেট করে পাকশি, জয়নগর ও ঈশ্বরদী এলাকায় গড়ে উঠেছে বেশকিছু মদের দোকান। এদের মধ্যে অধিকাংশই অনুমোদনহীন। এছাড়া প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় একটি চক্র বিদেশিদের কাছে গোপনে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ভেজাল মদও সরবরাহ করে। এসব মদ পানেই বিষক্রিয়া ও হৃদরোগে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।  

এ বিষয়ে জানতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের পরিচালক শওকত আকবরের ফোনে একাধিকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

এদিকে কয়েকদিনে বিদেশি নাগরিকদের মৃত্যুর কারণ খুঁজতে কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, অল্প সময়ে কয়েকজনের মৃত্যুর কারণ খুঁজে দেখা হচ্ছে। এই প্রকল্পে বিদেশি নাগরিক যারাই মারা যান তাদের প্রত্যেকের লাশের ময়নাতদন্ত হয়। এই পাঁচ জনেরও হয়েছে। তাদের শরীর থেকে নেওয়া নমুনার রাসায়নিক পরীক্ষাও হবে। ইতোমধ্যে দুই জনের নমুনা রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি। 

তিনি আরও জানান, বিদেশি নাগরিকদের মৃত্যুর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও তদন্ত কমিটি হয়নি। রুটিন কাজের অংশ হিসেবে তদন্ত কাজ চলছে। 

রূপপুর প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, বিদেশি নাগরিকদের ভালো রাখার জন্য আমরা সবই করেছি। কিন্তু যা ঘটেছে তা অপ্রত্যাশিত। সেখানে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে বিদেশি প্রতিষ্ঠান। মৃত্যুর ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার কোনও তদন্ত কমিটি করবে না।

রূপপুর প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস জানান, প্রকল্প এলাকায় চার হাজার ৮০০ বিদেশি নাগরিক বসবাস করেন। সেখানে অনেকে পরিবার নিয়েও থাকেন। তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে সেনাবাহিনী। বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার কোনও সমস্যা নেই।