ব্রেকিং:
১২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ইলিয়াস ৯ মাসে পর জামিনে মুক্ত কুমিল্লার ২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ আজ ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা মেয়রের সামনেই কাউন্সিলরকে জুতাপেটা করলেন আলোচিত সেই চামেলী আজ ঢাকায় আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রাইসির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক কুবি প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে রাইসির হেলিকপ্টার, কোনো আরোহী বেঁচে নেই রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের ছবি-ভিডিও প্রকাশ্যে দুর্ঘটনাস্থলে রেড ক্রিসেন্ট, খুঁজে পেয়েছে রাইসির হেলিকপ্টার চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে নিখোঁজ এমপি আনার আজ থেকে ৬৫ দিন সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা জিয়াউর রহমান যেভাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে চেয়েছি চলতি হজ মৌসুমে প্রথম বাংলাদেশী হজযাত্রীর মৃত্যু শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ধর্ম অবমাননা কুবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ ‘পিডাইয়া লম্বা করে দেওয়ার নির্দেশ’ ফুলবাড়িতে সীমান্তে ঢুকে বিএসএফের গুলিবর্ষণ
  • মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষার্থীদের ক্ষতির দায় কে নেবে?

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৪  

শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলন: উপাচার্যশিক্ষক সমিতির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জন
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে নিজেদের বিরত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। যদিও বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এএফএম আবদুল মঈন বলছেন, সমাধানে- আলোচনার জন্য দায়িত্ব নিয়েছে সিন্ডিকেট। কিন্তু শিক্ষকরা তা মানছেন না। তবে  আন্দোলনের কারণে বিশ^বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শ্রেণী কার্যক্রম এবং পরীক্ষার যে ক্ষতি হবে তার দায় কে নেবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ^বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান,  গত দুই বছরের সেশনজট কমিয়ে আনার চেষ্টা করে বিশ^বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রমে কিছুটা স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছিলো- তার মধ্যেই এই আন্দোলন। শিক্ষার্থীরা আবার সেশনজটে পড়বে, পিছিয়ে পড়বে।  

এদিকে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে শিক্ষক সমিতি আন্দোলনে নেমেছেন বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এএফএম আবদুল মঈন। গতকাল ২৯ এপ্রিল বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক সকল কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণার পর বিকালে উপাচার্য একথা বলেন।  তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষক সমিতি হলে এধরনের কর্মসূচি থেকে তারা বিরত থাকতেন। আমরা গত দুই বছরের সেশনজট কমানোর চেষ্টা করছি। আমরা বলেছি - যে কোন সমস্যা সমাধানে আলোচনায় আসেন, কিন্তু তারা যদি সমাধানে না এসে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করে- তা কতটা যৌক্তিক এবং মানবিক এই প্রশ্ন রইলো।    
অন্যদিকে গতকাল দুপুরে কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে জরুরি সভা শেষে শিক্ষক সমিতির দাবি না মানা পর্যন্ত  প্রশাসনিক ও একাডেমিক সকল কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান। যদিও শিক্ষক সমিতি বলছে- ভর্তি পরীক্ষা তাদের কর্মসূচির বাইওে থাকবে। প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু তাহের সাংবাদিকদের জানান, যে উপাচার্য নিজেই হামলায় অংশগ্রহন করে- সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, আমরা শিক্ষরা মনে করি এই উপাচার্য তার পদে থাকার যোগ্যতা আর নাই। উপাচার্যের সকল অনৈতিক কার্যক্রমে সহায়তা করে কোষাধ্যক্ষ। তাই উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ যদি পদত্যাগ না করে কিংবা সরকার যদি তাকে অপসারণ না করে তাহলে শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা বিশ^বিদ্যালয়ে কোন একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করবেন না।
এদিকে গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য তার দপ্তরে প্রবেশ করতে যাবার সময় উপাচার্যপন্থীদের সাথে আন্দোলনরত শিক্ষকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের আহত হবার দাবি করছে মুখপাত্ররা। শিক্ষক সমিতি বলছে, বহিরাগত ও অছাত্রদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন তারা। ভিসির দাবি, শিক্ষকরা তাকে বেআইনীভাবে আটকাতে চেয়েছেন, এসময় তিনিসহ তার পক্ষের আরো কয়েক আহত হয়েছে। তবে এই ঘটনায় উভয় পক্ষই সদর দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।   

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান জানান, ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।   
উপাচার্যের উপস্থিতিতে শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচার, প্রক্টরের অপসারণ, ঢাকার গেস্টহাউস অবমুক্তকরণ, অধ্যাপকদের পদোন্নতি, আইন মোতাবেক বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ, শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে আইন বহির্ভূত অবৈধ শর্ত আরোপ নিষ্পত্তিকরণ, ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা রহিতকরণ এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করাসহ ৭ দফা দাবিতে কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে। উপাচার্য তাদের মত করে তাদের দাবি না মানায় তারা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার এবং প্রক্টরকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন এবং তাদের দপ্তরে তালা দিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এতেও কোন ফল না আসায় উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে তারা। যদিও উপাচার্য বলছেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মেনে আলোচনায় আসছে না শিক্ষক সমিতি।  
বিভিন্ন দাবিতে গত বছরের জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত  ১৫ জন কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন।
আন্দোলনের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হওয়ার আহবান জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাওহীদ হোসেন সানি বলেন, করোনা মহামারীর কারণে আমাদের শিক্ষা জীবন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার উপর এখন শিক্ষকদের ক্লাস পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। ইদের পর আমাদের স্নাতকোত্তর ১ম সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা, কিন্তু ইদের আগেও ক্লাস বয়কটের কারণে ক্লাস হয়নি, ইদের পর এসেও ক্লাস হচ্ছে না। তাতে আমাদের কোর্সও শেষ হচ্ছে না, পরীক্ষায় বসতে পারছি না। আমাদের বয়সতো থেমে নেই।
মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পাভেল রানা বলেন, ' করোনার কারণে আমরা একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখন আবার শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছে না। এভাবে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষক সমিতি ও উপাচার্যের মধ্যে যে ঝামেলা সেটা তারা আলোচনা করে সমাধান করুক। আমাদের কেন জিম্মি করে হচ্ছে! আমরা স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রম চাই। দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হতে চাই।