ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

৪০ হাজার কোটি ডলারের মালিক, প্রতি শুক্রবার করতেন মসজিদ নির্মাণ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২  

থিবীর সর্বকালের সেরা ধনী মুসলিম শাসক মানসা মুসা। তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার কোটি ডলার।    আধুনিক ধনকুবেরদের ইতিহাসে তার মতো এতো বেশি সম্পদ অর্জন করতে পারেননি। ২০২২ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের ধনী ব্যক্তির তালিকার প্রথম ব্যক্তি ইলন মাস্ক। চলতি মাসে তার সম্পদের পরিমাণ ২৭০ বিলিয়ন ডলার।

তবে আজ মানসা মুসা বেঁচে থাকলে তিনি অর্জন করতেন বিশ্বের ধনী ব্যক্তি প্রথম স্থানে। বলা হয়ে থাকে কারো পক্ষে যতটা বর্ণনা করা সম্ভব তার চেয়েও ধনী ছিলেন মানসা মুসা। এই ধনকূপের কাছে এতো বেশি পরিমাণ সোনা ছিল যে তিনি তার রাজ্য থেকে ১০ কিলোমিটার লম্বা একটি পথ সোনা দিয়ে ঢেকে দিতে পারতেন। 

১৪ শতকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী তিনটি অঞ্চলের একটি ছিল পশ্চিম আফ্রিকার মালি সাম্রাজ্য। যা ছিল প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ। মুসার শাসনামলে প্রাচীন বিশ্বের সোনা প্রায় অর্ধেক মালি সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। শুধু সোনা উত্তোলনে নয়, পাশাপাশি পুরো দুনিয়ার অর্ধেক লবণ আহরণ হতো মুসার সাম্রাজ্যের অধীনে। এসবের মালিক ছিলেন রাজা নিজেই। 

বিশাল সোনা আর লবণের বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন মুসা। এই ধনকুবের জন্ম ১২৮০ খ্রিষ্টাব্দে। বড় ভাই আবু-বকরের মৃত্যুর পর তিনি মালির রাজা হন ১৩১২ খ্রিষ্টাব্দে। তার শাসনামলে মালি সাম্রাজ্যের শান-শওকত ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। তৎকালীন রাজধানী তিম্বুকতুসহ ২৪টি নগর যুক্ত করে মালি সাম্রাজ্য। আটলান্টিক মহাসাগর থেকে শুরু করে বর্তমান নিজার, সেনেগাল, মৌরিতানিয়া, মালি, বুর্কিনা ফাসো, গাম্বিয়া, গিনি-বিসাউ, গিনি এবং আইভোরি কোস্টের বড় অংশ ছিল তার রাজত্বে। 

নিজের সাম্রাজ্যের মধ্যে ধর্ম প্রচারের কাজে বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। ১৩২৪ থেকে ১৩২৫ সালের মধ্যে হজ করতে গিয়েছিলেন এই ধনকুব। ঐ সময় তার সঙ্গে ছিল ৬০ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে ১২ হাজার  ছিল সেবক যাদের প্রত্যেকের সঙ্গে ছিল একটি করে সোনার দন্ড। এছাড়াও ৮০ থেকে ১০০টি উট ছিল, যেগুলো প্রত্যেকটি প্রায় ১৪০ কেজি সোনার গুঁড়ো বহন করছিল। তার এই যাত্রাপথে তিনি প্রায় কয়েকশত কোটি টাকা মূল্যের সোনা বিতরণ করেছিলেন। 

বলা হয়ে থাকে ঐ হজে মানসা মুসা আজকের দিনের প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড ওজনের সোনা ব্যয়  করেছিলেন। যে কারণে এরপরের কয়েক বছর কায়রো, মক্কা এবং মদিনায় সেখানে সোনার দাম একেবারেই নেমে গিয়েছিল। এতে শহরগুলোর অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, বেড়ে গিয়েছিল মুদ্রাস্ফীতি। তিনি সোনা নিয়ে গিয়েছিলেন হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে আর ফেরত আসেন জ্ঞান নিয়ে। 

মক্কা থেকে বেশ কয়েকজন ইসলামী চিন্তাবিদকে সঙ্গে নিয়ে আসেন মানসা মুসা।  তিনি প্রতি শুক্রবার একটি করে মসজিদ নির্মাণ করতেন। ধনী সে রাজাকে পশ্চিম আফ্রিকায় শিক্ষার প্রসারের অগ্রদূত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও সাম্রাজ্যের বাইরে তার গল্প খুব কম মানুষেই জানতে পেরেছিলেন। 

১৩৩৭ সালে ৫৭ বছর বয়সের মানসা মুসার মৃত্যু হয়। তারপর ছেলেরা আর বাবার সাম্রাজ্য ধরে রাখতে পারেননি। ছোট রাজ্যগুলো একে একে বিদ্রোহ করে এবং একসময় পুরো রাজ্যকে ধ্বংস করে দেয়। মানসা মুসার সমৃদ্ধ মালি সম্রাজ্য বর্তমানে আফ্রিকার দরিদ্রতম একটি দেশে পরিণত হয়েছে।  

সূত্র: হিস্ট্রি/ উইকিপিডিয়া/ বিবিসি