ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কুমিল্লায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: চোখ হারাতে হলো শিশু নাহিমকে

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২২  

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে গ্যাস বেলুনের সিলিন্ডারের ভয়াবহ বিস্ফোরণে চোখ হারিয়েছে আবদুল্লাহ আল নাহিম নামে ১২ বছরের এক শিশু। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি জানিয়েছেন শিশুটির মামা মোবারক হোসেন মাসুদ। নাহিম বর্তমানে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার মোকরা ইউনিয়নের বিরুলী গ্রামে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন ৪১ জন। যাদের বেশিরভাই শিশু। 

নাহিম বিরুলী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হালিমের ছেলে। সে স্থানীয় তুলাতলি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে নাহিম মেজ। 

শনিবার রাতে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান, বিস্ফোরণের সময় নাহিমের ডান চোখে দুটি পাথরের টুকরো ঢুকে পড়ে। এতে নাহিমের ডান চোখটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। শুক্রবার বিকেলে অস্ত্রপচার করে নাহিমের অকেজো চোখটি তুলে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত। আমরা তাকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।  

শিশুটির মামা মোবারক হোসেন মাসুদ বলেন, ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর আমরা বৃহস্পতিবার রাতে নাহিমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার অবস্থা আরও অবনতি হলে নিজ উদ্যোগে তাকে ওইদিন রাতেই জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসি। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, তার চোখটি আর কখনও প্রতিস্থাপনও করা যাবে না।

তিনি বলেন, নাহিমের বাবা আগে দুবাই ছিলেন। এখন তিনি বেকার। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তার অনেক আশা ছিলো। এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটল।

নাহিমের মা নাজমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে নাহিম গ্যাস বেলুন দেখতে সেখানে গিয়েছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর দেখি নাহিমের চোখ দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। রক্তে তার জামা ভিজে গেছে। আমার ছেলেটার ভবিষ্যত নষ্টই হয়ে গেল। 
 
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর মাঘ মাসের ১ তারিখে একদিনের জন্য অনুষ্ঠিত হয় 'ঠাণ্ডকালী' মেলা। প্রায় দুই’শ বছরের পুরোনো মেলাটি বসে নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের মোঘরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। এই মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো মানুষজন ঘুরতে ও কেনাকাটা করতে আসেন। শনিবার (১লা মাঘ) ওই মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। পাশের মোকরা ইউনিয়নের বিরুলী গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন ওই মেলায় গ্যাস বেলুনের ব্যবসা করেন। তার কাছ থেকে পাইকারি ক্রেতারাও বেলুন নিয়ে মেলায় বিক্রি করেন। 

পাইকারি ক্রেতাদের জোগান দিতে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আনোয়ারের বাড়িতে সিলিন্ডার থেকে বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভরছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ সিলিন্ডারটি ভয়াবহ বিস্ফোরণে উড়ে যায়। এতে পাশে ভিড় জমানো অন্তত ৪১ জন আহত হয়। আহতদের বেশিরভাগই শিশু। চিকিৎসকরা বলছেন, ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে পর সিলিন্ডারটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করেছে। আহতদের অনেকের শরীরে এক হাজারের বেশি স্প্লিন্টার প্রবেশ করেছে। যদিও এ বছর মেলার অনুমোদনই দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লামইয়া সাইফুল।

বিস্ফোরণে চোখ হারানো শিশু নাহিম এবং অস্ত্রপচারের পর তার চোখ থেকে বের হওয়া পাথরের টুকরো।