মামলাজটে ক্রিটিক্যাল অবস্থা : প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে বর্তমানে এত মামলা, ফাইল রাখার জায়গা নেই। এক কথায় ক্রিটিক্যাল অবস্থা, এভাবে চলতে পারে না।

রোববার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে এক মামলার শুনানিতে প্রসঙ্গক্রমে তিনি একথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের মামলার নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেখে আমি প্রায় বিব্রত। এত মামলা! এভাবে চলতে পারে না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি মামলাজট নিরসনে সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতিদের নিয়ে বসব। 

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে প্রায় ৫ লাখ ২৫ হাজার মামলা বিচারাধীন। যা ১৯৮২ সালে ছিল মাত্র ২৫ হাজার। আর আগাম জামিনের আবেদনগুলো যদি নিষ্পত্তি না করা হতো, তাহলে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে মামলার পরিমাণ ৫ থেকে ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেত।

এর আগে শনিবার সুপ্রিম কোর্টের জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ (জিআইজেড) আয়োজিত দেশের মামলার বিচার-সংক্রান্ত এক নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারাধীন মামলায় বন্দিদের নিয়ে দেশের কারাগারগুলো প্রচণ্ডরকম গাদাগাদি পূর্ণ খারাপ অবস্থায় আছে।

বিচার ব্যবস্থার বিদ্যমান অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি মামলাজট ও উত্তরণে মতামত তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি। আর বিচারাধীন মামলার তুলনায় বিচারকের অপর্যাপ্ততা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিদিন বেড়েই চলেছে মামলাজট। দেশে প্রতি দশ লাখ লোককে মাত্র ১০ জন বিচারক  সেবা দিচ্ছেন।

বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির একটি নিরীক্ষা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মামলা পারস্পরিক বোঝাপড়া বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে শেষ হয়। সেখানে বড়জোর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয় আদালতে। আর বাংলাদেশের চিত্র ঠিক এর বিপরীত। এদেশে কেবল ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়ে থাকে বোঝাপড়া বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে। আর ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয় আদালতে।