যে কারণে ২০ বছর বয়সী মেয়েদের তুলনায় ৩০ বছরের মেয়েদের সুন্দর দেখায়

এখনকার দিনের ৩০ বছর বয়সী মেয়েদের দেখে ২০ বছর বয়সী মেয়ে ভেবে ভুল হওয়া খুব স্বাভাবিক। তারা দেখতে যেমন সুন্দর তেমন তারুণ্যদীপ্ত। শুধু দেখতেই নয়, তাদের হাব ভাব, কণ্ঠ এবং শরীরের ভাষাতেও তাদের অল্প বয়সী বলেই মনে হয়। বয়সের পার্থক্য ১০ বছর হলেও তাদের একই প্রজন্মের বলে মনে হয়। এর কারণ কি হতে পারে?

আমরা ২০ এবং ৩০ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে বেশ কিছু মিল এবং বয়সের পার্থক্য থাকার পরও ৩০ বছরের মেয়েরা কেনো বেশি আকর্ষণীয় তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আসুন দেখা যাক কারণগুলো।

১. তারা বয়স বা কোনো কিছুকে পরোয়া করে না

অদ্ভুত শোনালেও এ কথা সত্যি যে, বয়স বাড়লে আমরা অনেক বিষয় খুব সহজে মেনে নিতে শিখে যাই, যেমন- বয়স নিয়ে মানুষের কথা বর্তা বা সমালোচনা। ৩০ বছর বয়সী মানুষ অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং তাদের নিয়ে মানুষ কি ভাবে তা পাত্তা দেয় না। ফলে সে নিজেকে খুব সহজেই আকর্ষণীয় এবং দারুণ করে সাজাতে পারেন।

২. তারা হাল ফ্যাশন অনুকরণ করে

হাল আমলে ২০ বছর কি ৩০ বছর, সব বয়সী মেয়েরাই একই মেকআপ এবং পোশাকের ধারা অনুকরণ করে। ২০ বছর বা ৩০ বছর বিষয় নয়, এখনকার সময়ে সবাই একই মেকআপ নিতে পারে, একই পোশাকে তাদের বেমানান লাগে না। শুধু মাত্র হাল ফ্যাশন অনুকরণ করলেই হলো। কেউ বাঁধা দেওয়ার নেই।

৩. তারা দামী জিনিস পত্র এবং সেবা নিতে পারেন

৩০ বছর বয়সে এসে প্রায় সব মেয়েই এটা বুঝে যায় তার জীবনে আসলে কী দরকার এবং তাদের আয়ের উৎসও থাকে। তাও যদি না থাকে তবুও অনেক অভিজ্ঞতা জমা থাকে তাদের ভাণ্ডারে। তাই দামী পোশাক, দামী অলঙ্কার কেনার সামর্থ্যও তাদের হয়ে যায় এই বয়সে। তাই স্বাভাবিক ভাবে তারা নিজেদের আগের চেয়ে অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে পারে।

৪. তাদের স্টাইল নির্দিষ্ট করে ফেলতে পারে

জীবনের সোনালী সময় বলতে ৩০ বছর বয়সকে বোঝায়। এই সময়ে একজন নারী তার নারীত্বের পূর্ণতা লাভ করে এবং তার কাজ, পরিবেশ এবং শিক্ষার প্রভাব পোশাকের উপর পড়ে। ফলে সব কিছু বিবেচনায় তারা একটি স্টাইল বেছে নিয়ে থিতু হতে পারেন। এই সময় তারা নিজেদের মানায় এমন পোশাক এবং সাজ সজ্জা নির্দিষ্ট করে ফেলে। যা অনেক পরিবর্তন, পরিমার্জন এবং সংশোধনের ফল।

৫. আত্মসম্মান বোধ প্রবল হয়

বাবা মায়ের বকা খেয়ে বা প্রেমিকের সাথে অভিমান করে অথবা পরীক্ষায় বাজে ফলাফলের কষ্টে সারা রাত কেঁদে সকালে কিংভুতকিমাকার হওয়ার মতো ঘটনা ৩০ এর দিকে এসে আর ঘটে না। এই বয়সে মেয়েরা প্রবল আত্মসম্মান বোধ সম্পন্ন হয়ে ওঠেন এবং এইসব উটকো ঝামেলা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেন। তাই ২০ বয়সীদের চেয়ে তারা অনেক কম মানসিক চাপে ভোগেন। যার প্রভাব পড়ে তার সৌন্দর্যে।

৬. তাদের চাওয়া সম্পর্কে তার নিশ্চিত

২০ বছর বয়সে একটি মেয়ে সুস্থির হতে পারে না- তার অনেক চাওয়া পাওয়া, পছন্দ অপছন্দ থাকে। আজ এটা ভালো লাগে তো কাল ওটা। কিন্তু ৩০ বছর বয়সীদের এই সমস্যা নেই। তারা পছন্দ অপছন্দ এবং চাওয়া বা আগ্রহের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে যান। তাই তাদের নিজেকে আকর্ষণীয় করতে আগের মতো হিমশিম খেতে হয় না।

৭. নিজেকে নিজের সঙ্গে মানিয়ে নেয়

এই বয়সে নিজেকে নিজের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলে। তাই তার অল্প বয়সের মত দ্বিধায় ভুগতে হয় না এবং তাদের লোকলজ্জার ভয় কেটে যায়। ফলে যাবতীয় সমস্যা কাটিয়ে উঠে নিজের মতো করে স্বাচ্ছন্দ্যে চলা ফেরার স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারে। তাই নিজেকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপনে বেগ পেতে হয় না।

৮. আজে বাজে খাবার খাওয়া কমে যায়

৩০ বছর বয়সী মেয়েরা মন চাইলেই যা তা খাওয়ার মানসিকতা থেকে সরে আসে যা তাদের খাদ্য পরিকল্পনায় এবং স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। তারা বাচ্চা মেয়েদের মতো ভাজা পোড়া, মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং কোল্ডড্রিংকস বা আইসক্রিমের প্রতি আর আসক্ত থাকে না। ফলে তাদের ত্বক সুন্দর এবং উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

৯. তারা বুঝে যায় সৌন্দর্য চিরস্থায়ী নয়

২০ বছর বয়সে একটি মেয়ে মনে করে তাকে বোধয় সারা জীবনই এমন দেখাবে। বরং তার সুস্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য বয়সের সাথে বৃদ্ধি পাবে। তাই তাদের রূপ লাবণ্য নিয়ে তেমন একটা সচেতন হতে দেখা যায় না। কিন্তু ৩০ বছর বয়সে এসে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় তারা দিন দিন বয়স্ক হবে। তাই শরীর ও মনের উপর তারা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। শরীরের যত্ন, রূপচর্চা এবং দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা ইত্যাদি আয়ত্বে আনে। ফলে একই সময়ে ২০ বছর বয়সী একটি মেয়ের সাথে তুলনা করতে গেলে ৩০ বছরের মেয়েটিকেই এগিয়ে রাখতে হয়।

জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে, সমাজে সচেতনতা বেড়েছে এবং নারীরা আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছে। তাই আগের মতো কুড়িতে বুড়ি হওয়ার দিন আর নেই। সমাজ বিশেষজ্ঞদের মতে ৩০ই হলো এখনকার ২০।