ব্রেকিং:
শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে কাঁদলেন র‍্যাব কর্মকর্তা দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ রাত ১১টার পর চা-পানের দোকান বন্ধের নির্দেশ রাত ৮টার পর শপিংমল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন
  • বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

তিতাসে জহির হত্যার পর বিবাদীদের বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২  

কুমিল্লার তিতাসে যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলামকে (৩৫) হত্যার পর মানিককান্দি গ্রামে  বাদী পক্ষের লোকজন বিবাদীদের বাড়ি-ঘরে লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘটনার দিন জহির হত্যার প্রধান বিবাদী  সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের ১০ রুমের একটি বিল্ডিং ও ১টি চৌচালা টিনের ঘরে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে দেয়। পরে ঘটনার দুইদিন পর একই গ্রামের বাসিন্দা মোহন ভূঁইয়ার ৪ ছেলে মনির হোসেন, বিল্লিল, শাহাজাহান ও আবদুল বাতেন তাদের ৩টি টিনের চৌচালা ঘর ও একটি বিল্ডিংয়ে লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন বিবাদীরা।

এবিষয়ে নিহত যুবলীগ নেতা জহির মোল্লার বাবা আবুল হোসেন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা লুটপাট বা অগ্নিসংযোগ করি নাই, তারা ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য নিজেরাই নিজেদের মালামাল সরিয়েছে এবং তাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। 

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে জহিরকে পরিকল্পিতভাবে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে এবং ঘটনার আগের দিন রাতে দুলারামপুর গ্রামের মোখলেছ মেম্বারের বাড়িতে মিটিং করছে বাবুল চেয়ারম্যান, সাইফুল ইসলাম, ফারুক ও মোয়াজ্জেমসহ ২০/৩০জন। উক্ত মিটিংয়ে তারা পরিকল্পনা করেই আমার বুকের ধন জহিরকে হত্যা করেছে এই কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পরেন।

অপরদিকে মামলার ১নং বিবাদী সাইফুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আবু মোল্লা চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে আবু মোল্লাসহ তার ছেলেরা আমাদের পরিবারের উপর প্রায় ১০ বছর যাবৎ অন্যায় অত্যাচার, জুলুম ও জায়গা দখল করে আসছে। ২০১৩ সালে আমর ছোট ছেলে সোহরাবকে মেরে দুটি পা ভেঙে দিয়েছিলো হাসপাতাল পর্যন্ত নিতে দেয় নাই তারা এবং অ্যাম্বুলেন্সও আটকিয়ে রাখছিল। তারপর আমাদের বাড়িতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে এবং আমাদের মারধর করেছে। তাদের ভয়ে আমরা প্রায় ১০ বছর বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় ছিলাম। এখন ১ বছর হয়েছে বাড়িতে আসছি। আবার আমাদের পরিবারের উপর হামালা, মামলা শুরু করছে।

গত ৬ ডিসেম্বর আমাদের ক্রয়কৃত পুকুরে আমরা মাছ ধরতে গেলে জহির তার দলবল নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে কয়েক জনকে আহতও করে, পরে জহির তার বাহিনি নিয়ে আবার আমাদের বাড়িতে চলে আসে আমার ছেলে সোহরাবকে ধরে নেওয়ার জন্য তখন মারামারি হয়। তারপর আমরা তাদের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে আসি, এই সুযোগে তারা আমাদের বিল্ডিংয়ে আলমারিতে থাকা ৫ লাখ টাকা, ৪০ ভরি স্বর্ণ, ৯টি খাট ও স্টিলের আলমারি, শোকেস, ফ্রিজ, টিভি, সোফা লুটপাট করে বিল্ডিংয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে আমাদের প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে বিবাদী আবু মোল্লার লোকজন।

৪১ নং বিবাদী জিয়ারকান্দি ইউপি সদস্য হারুন মিয়ার ছেলে ইয়াছিন বলেন, আমার বাবা ঘটনার সময় ঢাকা এয়ারপোর্টে ছিলেন, সন্ধ্যার সময় বাড়িতে এসে ফেসবুকের মাধ্যমে জানেন মানিককান্দি গ্রামে মারামারির হয়েছে। ঘটনাস্থল আমাদের এখান থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। এছাড়াও আমার কাকা আবু মিয়া আমাদের এখানে মাছের প্রজেক্টে ছিলেন তাকেও আসামি করা হয়েছে যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। 

অপরদিকে আরেক বিবাদী আব্দুল বাতেনের স্ত্রী শামসুন্নাহার বলেন, ঘটনার ২ দিন পর বাদীর লোকজন আমাদের পরিবারের ওপর অত্যাচার জুলুম শুরু করেন তখন আমরা ভয়ে বাড়ী ছেড়ে চলে আসি, আমাদের ৩টি ঘর ও একটি বিল্ডিংয়ে থাকা প্রায় এক কোটি টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১৫ লাখ টাকা লুট করে নিয় যায়। এখন আমরা ভয়ে বাড়ি যেতে পারছি না। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মানিককান্দি গ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনার পরবর্তীতে কোনো বাড়িতে অগ্নিসংযোগ বা লুটপাটের ঘটনা আমার জানা নেই। তবে মোকারম নামে একজনের কয়েকটি গরু তার নিজ বাড়িতে ছিল, আমরা গরুগুলো উদ্ধার করে তার পরিবারের লোকজনের হেফাজতে বুঝিয়ে দিয়েছি।

উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় যুবলীগ নেতা জহিরকে প্রতিপক্ষরা কুপিয়ে হত্যা করে।