ব্রেকিং:
পতেঙ্গায় আগুন ধরে প্রশিক্ষণ বিমান কর্ণফুলীতে, ২ পাইলট আহত কুমিল্লায় তিন উপজেলায় বিজয়ী যারা- মনোহরগঞ্জে ভোটার না থাকলেও বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষে ৭৭ হাজার ভোট! ব্যালটে ভুল প্রতীক, কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বদলি সাংবাদিকদের নাস্তার প্যাকেটে টাকার খাম! বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসী নিহত উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী সৌদিতে ফখরুল-ফালুর রুদ্ধদ্বার বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড় ৫ম বারের মতো প্রেসিডেন্টের শপথ নিলেন পুতিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিল বৃষ্টি, বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ শিক্ষার্থী দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি কেজিতে ১০ টাকা কমলো পেঁয়াজের দাম তিন রাত শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ কুমিল্লায় ‘কোরবানির আগে পেঁয়াজের দাম হবে ৫০ টাকার মধ্যে’ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ খাদ্য নিরাপত্তায় ২০ লাখ টন গম কিনছে সরকার শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস, আ.লীগ নেতাকে অব্যহতি কেন পিছু হঠল আওয়ামী লীগ
  • বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীতার বাধা ডিঙানো দুই বোন

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৩  

ইশরাত জাহান মিলি ও নুসরাত জাহান ডলি দুই বোন। জন্ম থেকে তারা বাকপ্রতিবন্ধী। কানেও শুনতে পায় না তাঁরা। তবুও  দুইবোন লেখাপড়া করছে। অন্যসব শিক্ষার্থীর মতো শিক্ষকের কথা শুনতে পায় না তাঁরা। শোনা ও বলার বাধা ডিঙিয়ে বুকে অদম্য সাহস নিয়ে দুই বোন পড়াশোনা করছে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে নিচ্ছে আইসিটি ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ। ইশরাত ও নুসরাত দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের খাইয়ের গ্রামের মৃত আবু তাহের মিয়ার মেয়ে। গত ১০ বছর আগে তাহের মিয়া ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিলেন। এরপর সংসারের হাল ধরেন তাদের মা খুরশিদা বেগম। শাহিনুর নামে খুরশিদার আরও এক মেয়ে আছে, সেও বাক ও শ্রবনপ্রতিবন্ধী। বর্তমানে শাহিনুর স্বামীর বাড়িতে থাকেন। খুরশিদার স্বামী মারা যাওয়ার পর বাক প্রতিবন্ধী তিন মেয়ের স্কুলে পড়ালেখা করানোর সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেন। এরই মধ্যে বড় বোন শাহিনুরকে বিয়ে দিয়ে দেন খুরশিদা। কিন্তু বিপাকে পড়ে ইশরাত ও নুসরাতকে নিয়ে। বাক প্রতিবন্ধী হয়েও তাদের পড়া লেখা করার অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে হেরে যান মা খুরশিদা বেগম। বাধ্য হয়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। এরপর শত অভাব অনটনের মধ্যেও ইশরাত ও নুসরাত লেখা পড়া চালিয়ে যেতে থাকেন। তারা অন্যসব শিক্ষার্থীদের মতই স্কুলে আসা যাওয়া করত। আকার-ইঙ্গিতে ও লেখে পড়া আদায় করতেন। স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরাও তাদের সহযোগিতা করেছেন।  
বর্তমানে ইশরাতের বয়স ২৬ বছর আর নুসরাতের বয়স ২১। ইশরাত ২০১৫ স্থানীয় মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সালে এসএসসি পাশ করে মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। পরে একাদশ শ্রেণীতে আইসিটি বিষয়ে খারাপ হওয়ায় দাউদকান্দি প্রতিবন্ধীদের একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে  আইসিটি প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আর নুসরাত ২০১৮ সালে একই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে একই কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছেন। পাশাপাশি সেও আইসিটি ও কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
তাদের মা খুরশিদা বেগম জানান, প্রথম প্রথম ওদের নিয়ে কষ্ট হতো। তাদেরকে সংসারের বোঝা মনে হতো। এখন ইসরাত ও নুসরাত আকার ইঙ্গিতের মাধ্যমে ঘরের সব কাজ করে ফেলে। ওরা শুধু কথা বলতে বা শুনতে পারেনা , আর কোন সমস্যাই ওদের হয়না। ওরা কিছু বলতে চাইলে আমাকে ইশারা করলে আমি বুঝি। বাহিরের লোকদের লেখে বুঝাতে হয়। এছাড়াও তাঁরা ফেসবুক, হোয়াটসআ্যাপ ইমুতে চ্যাট করতে পারে। আমার তিন মেয়ে বাকপ্রতিবন্ধী। এর মধ্যে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এখন এই দুই মেয়ে পড়া শুনা করছে। তারা চাকরি করে নিজের পায়ে দাড়াতে চায়। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আমার মেয়েদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
দেবিদ্বারে উপজেলা অফিসার নিগার সুলতানা জানান, প্রতিবন্ধকতা কখনোই সাফল্যকে আটকে দিতে পারে না। প্রতিবন্ধীরা বুঝা নয়, সঠিক যতœ ও পরিচর্যা পেলে ওরাও বদলে দিতে পারে সমাজ, সংসার ও পরিবার। অদম্য দুই বোনের আমাদের প্রেরণা। তাদের যেকোন সহযোগিতা দেবিদ্বার উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতার হাত বড়াবে।