ব্রেকিং:
সাংবাদিকদের নাস্তার প্যাকেটে টাকার খাম! বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসী নিহত উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী সৌদিতে ফখরুল-ফালুর রুদ্ধদ্বার বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড় ৫ম বারের মতো প্রেসিডেন্টের শপথ নিলেন পুতিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিল বৃষ্টি, বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ শিক্ষার্থী দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি কেজিতে ১০ টাকা কমলো পেঁয়াজের দাম তিন রাত শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ কুমিল্লায় ‘কোরবানির আগে পেঁয়াজের দাম হবে ৫০ টাকার মধ্যে’ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ খাদ্য নিরাপত্তায় ২০ লাখ টন গম কিনছে সরকার শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস, আ.লীগ নেতাকে অব্যহতি কেন পিছু হঠল আওয়ামী লীগ কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে কাঁদলেন র‍্যাব কর্মকর্তা দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ
  • বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রথম আলো ও Daily Star কি দায় এড়াতে পারে?

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২১  

সাংবাদিক রোজিনা ইস্যুটি নিয়ে দিনকে দিন জল ঘোলা হয়েই যাচ্ছে। যতই তদন্ত ও পুণঃতদন্ত হচ্ছে ততই এ কথা প্রতীয়মান হচ্ছে একটি প্রশ্নে—প্রথম আলো পত্রিকা কি রোজিনা ইস্যুর দায় এড়াতে পারবে?

এ ঘটনায় Daily Star–প্রথম আলোর ভূমিকা অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। তারা যেখানে কোনো সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে ‘ব্রেকিং নিউজ’ আকারে প্রচার করতে পারদর্শী, তারাই-বা এত বড় একটা খবর ৬ ঘণ্টা ধরে চেপে রাখল কেন?

সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতারা পরিস্থিতিটি জানতে পারলে নিশ্চয়ই তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যেতেন এবং একটা সুরাহার চেষ্টা করতেন। জাতীয় প্রেসক্লাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মাত্র ৫০ কদম দূরে এবং দুপুরের খাওয়ার সময় বহু সাংবাদিক নেতাই তখন ক্লাবে ছিলেন।
তাহলে প্রথম আলো নিজেই কি বিষয়টিকে এ পর্যায়ে বাড়তে দিয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় নিয়ে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চেয়েছে।

এক-এগারোর আমলে ‘মাইনাস টু’ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকা, রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে ড. ইউনূসের সঙ্গে মিলে রাজনৈতিক দল গঠন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বন্ধে প্রকাশ্য দৌড়ঝাঁপ ও ভোটের পরদিন তাদের প্রথম পাতায় নারী ভোটারদের কপালে সিঁদুর চড়িয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক ইঙ্গিতপূর্ণ খবর ছাপানো, যশোরে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশের স্থান হিসেবে রামকৃষ্ণ মিশনের নাম জুড়ে দিয়ে সারা দেশের মিশনগুলোতে মৌলবাদীদের আক্রমণ উসকে দেওয়া, শাহবাগে আন্দোলনরত নারীদের চরিত্র হনন করা গল্প প্রকাশ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া আমার দেশ পত্রিকার পাঠকদের বাজার ধরার চেষ্টা এবং তাদের নিজেদের অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে স্কুলছাত্র আবরারের মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়াসহ উল্লিখিত প্রতিটি অভিযোগ এত দিন ডেইলি স্টার-প্রথম আলো তাদের বিরুদ্ধে সরকারের নগ্ন হামলা হিসেবে প্রচার করে এসেছে। রোজিনা নির্যাতনের ঘটনাকে তারা নাকি এখন সেসব দাবির সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে হাজির করছে? আন্দোলনকারীরাই কি তবে তাদের এ পথ করে দিয়েছে?

সাংবাদিক সমাজ যখন রোজিনার ওপর আক্রমণকে সব সাংবাদিক ও স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চরম আঘাত হিসেবে বিবেচনা করে আন্দোলন করছে, তখন প্রথম আলোর সম্পাদক পরিষদ তখন ঘটনাটিকে কেবল একটা পত্রিকার কণ্ঠরোধের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে বিবৃতি দিল!

কেউ কেউ দেশের ভেতর কোনো জনমত তৈরির চেষ্টা না করে সোজা চলে গেলেন বিদেশি বন্ধুদের কাছে। এত দিন তারা অভিযোগ করে এসেছে, সরকার নাকি ডেইলি স্টার–প্রথম আলোতে বিজ্ঞাপন দিতে বাধা দিচ্ছে। যেখানে সাংবাদিক সমাজ নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেস কনফারেন্স বর্জন করেছে, সেখানে ডেইলি স্টার তাদেরই প্রেসনোট চাররঙা বিজ্ঞাপন আকারে ছেপে এ সুযোগে সরকারি বিজ্ঞাপনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল না তো?

তা ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক এভাবে আক্রান্ত হলে ডেইলি স্টার–প্রথম আলো কিংবা তাদের সাংবাদিকেরা কি নির্যাতিতের পাশে এসে দাঁড়াত? তাদের নাকি বড় ধরনের জাত্যভিমানও রয়েছে! রোজিনার মুক্তির পর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আন্দোলনরত সাংবাদিকদের ‘ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা’ জানানো বক্তব্যও অনেকের কানে লেগেছে।

সাংবাদিক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র যেকোনো মূল্যে ব্যর্থ করে দিতে হবে। যারা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়, তাদেরও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগ দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে যেসব রাজনৈতিক দলের গোড়াতেই গলদ, তাদের মায়াকান্নারও আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই।

ডেইলি স্টার–প্রথম আলোর স্বার্থে নয়, বরং তারা কিংবা অন্য কেউ যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত এ বিষয়কে অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্য আন্দোলনের নেতৃত্ব সাংবাদিক সমাজ অনেক চাপ সহ্য করেও নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। মানুষ যখন তথ্য জানতে চায়, মূলধারার গণমাধ্যম যদি সেন্সরশিপে পড়ে যায়, তখন সবকিছুই চলে যায় গুজবের অধিকারে। এবার সাংবাদিক নেতারা প্রথম থেকেই সচেতন ছিলেন যেন আন্দোলনটি বেহাত হয়ে না যায়।

তবে সরকারের সংবেদনশীল অংশ ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুবিচার দাবি করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তো বলেই ফেলেছেন, এ ঘটনায় বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের মুখে কীভাবে কালিমা লেপেছে। অবশেষে পাঁচ দিন পর রোজিনার জামিনও মিলেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার ওপর আস্থা রাখতেই হবে।