ব্রেকিং:
ব্যালটে ভুল প্রতীক, কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বদলি সাংবাদিকদের নাস্তার প্যাকেটে টাকার খাম! বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসী নিহত উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী সৌদিতে ফখরুল-ফালুর রুদ্ধদ্বার বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড় ৫ম বারের মতো প্রেসিডেন্টের শপথ নিলেন পুতিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিল বৃষ্টি, বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ শিক্ষার্থী দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি কেজিতে ১০ টাকা কমলো পেঁয়াজের দাম তিন রাত শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ কুমিল্লায় ‘কোরবানির আগে পেঁয়াজের দাম হবে ৫০ টাকার মধ্যে’ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ খাদ্য নিরাপত্তায় ২০ লাখ টন গম কিনছে সরকার শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস, আ.লীগ নেতাকে অব্যহতি কেন পিছু হঠল আওয়ামী লীগ কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে কাঁদলেন র‍্যাব কর্মকর্তা
  • বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আফ্রিকার দেশেও যেভাবে সরকারি ভাষা হয়ে ওঠে বাংলা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২ জানুয়ারি ২০২২  

আফ্রিকার পশ্চিম অংশের ছোট্ট একটি দেশের নাম সিয়েরা লিওন। এখানে দেখা মিলবে, বহু ভাষা এবং সংস্কৃতির সহাবস্থান। জনসংখ্যা সাড়ে ৭৬ লাখের কাছাকাছি। কিন্তু মজার বিষয় হলো, সুদূর আফ্রিকার এই দেশে অন্যতম একটি সরকারি ভাষার মর্যাদা পেয়েছে বাংলা।

সিয়েরা লিওনকে বলা হয় ‘হিরের খনির গরিব দেশ’। এখানে খনিজ পদার্থের ভাণ্ডার থাকলেও সাধারণ জনগণ দারিদ্রে কষ্টে দিন কাটান। ১৯৬১ সালে ব্রিটিশ শাসক থেকে স্বাধীন হয় দেশটি। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন স্যার মিলটন মারগাই। কিন্তু ১৯৬৪ সালে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা গেলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

সে দেশের ১৬টি উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকত। জনগণের মনে জমতে থাকে ক্ষোভ আর অসন্তোষ। কলহ বাড়তে বাড়তে স্বাধীনতার প্রায় তিন দশক পরে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। ১৯৯১-তে কিছু বিদ্রোহী দল চেষ্টা করে রাষ্ট্রপতি জোসেফ মোমাহকে পদচ্যূত করতে। তার থেকেই যুদ্ধের শুরু। রক্তাক্ত হয়ে ওঠে সিয়েরা লিওন। কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ঘরছাড়া হন লাখ লাখ মানুষ।

সিয়েরা লিওন সরকার ব্যর্থ হয়েছিল গৃহযুদ্ধ থামাতে। পশ্চিম আফ্রিকার অন্য দেশগুলো একত্রিত হয়েও কোনো মীমাংসা করতে পারেনি। অবশেষে ১৯৯৯ সালে যুদ্ধ থামানোর দায়িত্ব নেয় রাষ্ট্রসংঘ। তাদের শান্তি মিশনে যোগদান করে অনেক দেশ। বাংলাদেশও অংশ নেয়। রাষ্ট্রসংঘের পাঠানো প্রথম দলে ৭৭৫ জন বাংলাদেশি সেনা ছিলেন। যুদ্ধের অবস্থা খারাপ হতে থাকলে আরো সেনা পাঠানো হতে থাকে।

১২ হাজার বাংলাদেশি সৈন্য পা রাখেন সিয়েরা লিওনের মাটিতে। তারা যেমন বিদ্রোহ থামানোর কাজ করেছেন, স্থানীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গেও পরিচিত হওয়া শুরু করেন। সেখানকার জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেন। স্থানীয় মানুষেরাও আকৃষ্ট হন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি। এমনি তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠানে বাংলা গানের ব্যবহার শুরু হয়। বিবাদমান উপজাতিগুলোর মধ্যে সম্প্রীতির বোধ জাগিয়ে তোলেন বাংলাদেশি সৈন্যরা। অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনী ততটা আন্তরিকভাবে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে মিশতে পারেননি।

২০০২ সালে শান্তি ফিরে আসে সিয়েরা লিওনে। দেশ পুনর্গঠন এবং বন্ধুসুলভ আচরণের জন্য বাংলাদেশের কাছে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। বাংলাদেশি সৈন্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে বছরের ১২ ডিসেম্বর বাংলা ভাষাকে অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণা করেন সিয়েরা লিওনের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আহমেদ তেজান কাব্বা। তবে এই স্বীকৃতি কেবলই সাম্মানিক। সেদেশে সরকারি কাজকর্ম হয় ইংরেজি এবং ক্রিওল ভাষায়। রাষ্ট্রপতি তেজান কাব্বা ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সফর করেন।

বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরের একটি দেশ বাংলা ভাষাকে যে মর্যাদা দিয়েছে, তা সারা বিশ্বে এক অনন্য নজির।